বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনার মামলায় ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
একইসঙ্গে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যদিবসে সাক্ষ্য গ্রহণ চলবে।
এ সময় কারাগারে থাকা ২২ আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন। অভিযোগ গঠন করার আগে কারাগারে থাকা ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে গত ০৯ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করেন। আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। ০২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতের কাছে প্রার্থনা করেন। এরপর ১৩ আসামিপক্ষের অভিযোগ গঠন শুনানি করেন তাদের আইনজীবীরা। অপর আসামিদের পক্ষে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ না হওয়ায় ০৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে গত বছরের ০৬ অক্টোবর (রোববার) মধ্য রাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শের-ই-বাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। পর দিন সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।
ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ৬ জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ৫ জনের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ৮ জন।
গ্রেফতার ২২ জন হলেন, মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার ৩ আসামি এখনও পলাতক। তারা হলেন, মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দু'জন এজাহারভুক্ত ও শেষেরজন এজাহারবহির্ভূত আসামি।
-এমএ