সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পক্ষপাতিত্বে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে ঝিনাইদহ-২ আসনের ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচন হবে আর সেটা নিরপেক্ষ করতে বার বার নির্দেশনা দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশন।
স্বুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রার্থীদের মধ্যে যেকোন একজন বিজয়ী হবে। কিন্তু সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অত্যন্ত নিরপেক্ষ থেকে থানায় গেলে মামলা নিচ্ছে কিন্তু কাউকে ধরছে না। অথচ যারা সন্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা নিচ্ছেন। হয়রানী করছেন। এটা কোন পেনালকোডে আছে, কোন দেশে বাস করছি আমরা। এভাবে ওসি’র পক্ষপাতিত্বে একটা স্বুস্থ নির্বাচন হতে পারে না।
শুক্রবার দুপুরে সদর থানার ওসি(ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) শাহীন উদ্দিনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ, প্রচার প্রচারণায় বাঁধা, নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর ও কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় আহতদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র ঈগল প্রতিকের প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল। সদর পৌরসভার মুসা মিয়া আইসিটি ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেসময় সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরন উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আমি জয়ের ব্যাপারে যথেষ্ঠ আশাবাদী। আশ্বাস নয়, আমি বিজয়ী হলে কাজের মাধ্যমে, জেলায় রেলপথ স্থাপন, সড়ক পথ উন্নয়ন সহ বাসযোগ্য একটা স্থানে পরিনত করবো। এটাই হবে আমার প্রধানলক্ষ। যেখানে থাকবে না কোন হানাহানি।
সংবাদ সম্মেলনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদরে পুলিশ প্রশাসন যদি শক্ত হত তাহলে এমন ঘটনার উদয় হত না। পুলিশ সুপার তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। সব কাজই যদি এসপিকে করতে হয় তাহলে ওসি কি ঘোড়ার ঘাষ কাটছেন। প্রতিটা জিনিস তাদের নলেজে , সুরাট ইউনিয়নের প্রায় দেড় থেকে দুইশত মানুষ তাদের বাড়ি যেতে পারে না, তারাতো কোন উদ্বাস্তু না।
এ বিষয়ে বলে, লিখিত জানালেও ওসি’র কোন তাপ-উত্তাপ নেই। ওসির নিষ্ক্রিয়তাই উপর মহলকে জানালে সে বলে দেখছি। এসপির নির্দেশে চলতি মাসের ২৬ তারিখ বিকালে সদর উপজেলার সুরাট বাজারে সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানকে নিয়ে বিরোধ মিমাংশা করে ফিরে এসেছে তখনই আমার সমর্থকদের উপর হামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অথচ বিরোধ মিমাংশা শেষে ওসির সাথে শহরে ফেরার পরও রাতে শুনি আসামী করা হল জেলা পরিষদ সদস্য মোরাদিম মোস্তাকিম মনিরকে, ওয়ারেন্টও ইসু করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল বলেন, আমরা কোন মগের মুল্লুকে বাস করছি না। এভাবে যদি চলতে থাকে, ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি স্বুষ্ঠ ভাবে যদি দায়িত্ব পালন না করে তাহলে আমি আশংকা করছি ঝিনাইদহ-২ আসনের সদর উপজেলাতে কোন ভাবেই স্বুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভবপর হবে না। যেটা জনগন, সরকার, নির্বাচন কমিশন চাচ্ছেন। এই একটি মাত্র লোকের কারনে যদি স্বুষ্ঠ পরিবেশ ব্যহত হয় তাহলে তার দায়-দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। তিনি বলেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা কোন হামলা করিনি, অথচ আমাদের উপরেই হয়রানী হচ্ছে।
এই প্রার্থী বলেন, ওসির’র নিষ্ক্রেয়তাই সাধারন মানুষ যদি প্রতিবাদী হয়ে ওঠে তখন সেটা কিন্তু আমরা সামাল দিতে পারবোনা। সেই অবাঞ্চিত পরিস্থিতির দিকে যেন আমাদেরকে ঠেলে না দেওয়া হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলবো সেই দিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে।
তিনি বলেন, গত ১৮ তারিখ রাতে সদর থানা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরনের গাড়ী ভাংচুর করা হল, আমার লোকদের পিটালো প্রতিপক্ষরা। অথচ হামলার স্বীকার হয়েও হিরনের নামে মামলা নিল ওসি। এটা কোন অরাজকতা।
সদর উপজেলার বাসুদেবপুর, গোয়ালপাড়া, গান্না, হরিনাকুন্ডু উপজেলার শাখারীদহ বাজারে সহ বিভিন্ন স্থানে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার স্বীকার হচ্ছে আমার সমর্থকরা। ভাংচুর করা হচ্ছে প্রচার অফিস। এই পরিস্থিতি থেকে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
এদিকে প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন উদ্দিন জানান, কোন পক্ষাপাতিত্বের সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। থানায় উভয় পক্ষ মামলা দিতে পারে। তবে মামলার তদন্তেই বোঝা যাবে কারা দোষী আর কারা নির্দোষ। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন ভাবেই বলা যাবে না কোনটা সত্য আর কোন টা মিথ্যা। তবে নিরপেক্ষ থেকে স্বুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
জেএ/এমবি