For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মেহেরপুরের দুই সংসদীয় আসনের নির্বাচনী হালচাল

Published : Friday, 27 October, 2023 at 2:56 PM Count : 1065

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কড়া নাড়ছে দরজায়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগে কোন্দল চোখে পড়ার মত। বিক্ষুব্ধ আওয়ামী নেতারা এ ব্যাপারে দুষছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে।

কোন্দলের কারণ হিসেবে জানা যায় কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করা, কমিটিতে পরীক্ষিত নেতাদের স্থান না দেয়াসহ নানা কারণে একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই তার ওপর বিরুপ।

গত ০৩ সেপ্টেম্বর বিরোধী পক্ষ মেহেরপুর-১ (সদর-মুজিবনগর) আসন থেকে ফরহাদ হোসেনকে মনোনয়ন না দেওয়ার দাবিতে সভা করেছে। ওই সভার একদিন পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর পক্ষাবলম্বনকারীরা পাল্টা সভা করে বিরোধী পক্ষের নেতাদের কড়া সমালোচনা করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

মেহেরপুর-১ আসনের মতো মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনেও দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দলের মধ্যে চলছে বিরোধ। জেলা আওয়ামী লীগের বিরোধ ছড়িয়ে পড়েছে জেলার তিন উপজেলায়। এতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ধারণা করেছেন। 
মামলায় বিপর্যস্ত জেলা বিএনপিতে নানা বিষয় নিয়ে একসময় বিরোধ ছিল। কিন্তু এখন অতীতের সব দ্বন্দ্ব ভুলে তারা সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবির আন্দোলন বেগবান করার জন্য ঐক্য গড়ে তুলেছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি ও মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণের নেতৃত্বে একক ভাবে পরিচালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি।

মেহেরপুর-২ আসনেও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ একসঙ্গে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। উপরে না বোঝা গেলেও তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

নিজেদের কোন্দলে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৬ মে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সম্মেলনের ১৩ মাস পরে চলতি বছরের ২৮ জুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা কমিটির সম্মেলনের আগে উপজেলা পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয়। এসব কমিটিতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা বাদ পড়েন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনকে এই কমিটিতে রাখা হয়নি।

জেলা ও উপজেলা কোনো কমিটিতেই রাখা হয়নি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুলকে। একসময় যিনি আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে হাল ধরে রেখেছিলেন দলটির। এছাড়া জেলা কমিটিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রীসহ তাঁর বেশ কয়েকজন স্বজনকে রাখা হয়েছে।

এভাবে জেলা ও উপজেলা কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের না রাখা, প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন না করাসহ নানা কারণে জেলা আওয়ামী লীগে দুটি ধারার সৃষ্টি হয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন একদিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আর অপরপক্ষে আছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।

বিরোধী নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ফরহাদ হোসেন ২০১৪ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এলে সকলে তাঁর পক্ষে কাজ করেন এবং তিনি বিজয়ী হন। তারপর থেকে তিনি ত্যাগী নেতাদের আর পাত্তা দেননি। কোনো আলোচনা সভায় দলীয় কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের রাখা হয়না। ১০ বছরের ক্ষোভে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফরহাদ হোসেনকে আবার মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর পক্ষে কাজ করবেন না।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, 'জেলা আওয়ামী লীগকে পারিবারিকরণের কারণে প্রতিবাদ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। দলে প্রত্যেকের স্থান থাকার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি নিজের খেয়াল খুশি মতো লোকদের দিয়ে দল পরিচালনা করেন।

তিনি বলেন, 'প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দেখা পর্যন্ত করতে পারেন না। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। তিনি যদি নৌকার মনোনয়ন পান তবে নৌকায় আমরা ভোট দেব না।'

এদিকে, গত ০৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে জেলা আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক বলেন, 'দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে লিখিত আকারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।'

তবে দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমি মেহেরপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে জেলায় চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, হয়রানি, নির্যাতন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মুল করেছি। এলাকার প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে করে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে। যারা অবৈধ সুযোগ সুবিধা চাইতো তাদের প্রশ্রয় না দেওয়ায় সম্প্রতি তারা আমার বিরুদ্ধে সভা করে বক্তব্য দিয়েছেন।'

পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের দিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগের বিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, 'তাঁর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা নিজেদের যোগ্যতায় কমিটিতে স্থান পেয়েছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন।'

মেহেরপুর-১ আসন
মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলা নিয়ে মেহেরপুর-১ আসন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এই আসনের জয় পায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রফেসর আবদুল মান্নান। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আসনটি বিএনপির ঘরে গেলেও তৎকালীন সংসদ সদস্য আহাম্মদ আলীর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রফেসর আবদুল মান্নান আসনটি ফিরে পান। পরে ২০০১ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন আসনটি পুনরুদ্ধার করে। তবে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আসনটি চলে যায় আওয়ামী লীগের ঘরে। এরপর থেকে এই আসনটি আওয়ামী লীগের হাতেই আছে।

গত বছরের ০৯ মে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।  নতুন কমিটিতে রফিকুল ইসলাম তোতাকে সভাপতি ও আবুল কালাম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। আগের কমিটির সভাপতি জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস ছিলেন ফরহাদ হোসেনের পক্ষের নেতা। কমিটিতে তাকে রাখা হয়নি। এতে করে মুজিবনগর আওয়ামী লীগে কোন্দল দেখা যায়।

জিয়াউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, 'আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যেসব নেতাকর্মী নিজের জীবনের ভয় না করে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন তাদের দলের কোনো পদে রাখা হয়নি। ত্যাগী নেতারা দলে জায়গা পাচ্ছে না। ফরহাদ হোসেন নিজের ইচ্ছেমতো দল পরিচালনা করেন। নিজের পরিবারের বাইরে কাউকে মূল্যায়ন করেন না। এসব কারণে মুজিবনগর আওয়ামী লীগে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।'

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়নের আশায় সাত নেতা গণসংযোগ করছেন। তারা হলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইয়ারুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস শুকুর ইমন।

মেহেরপুর-২ আসন
শুধুমাত্র গাংনী উপজেলা নিয়ে মেহেরপুর-২ আসন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান এম এ খালেক। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান আমজাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন মকবুল হোসেন। ২০১৪ সালের আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান এম এ খালেক। কিন্তু দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মকবুল হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। তাদের বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের  নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাহিদুজ্জামানকে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাহিদুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় গাংনী উপজেলায় আওয়ামী লীগে দু'পক্ষের সৃষ্টি হয়। এর মধ্য একপক্ষের নেতৃত্বে সাহিদুজ্জামান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান। অপরপক্ষের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক ও সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক বলেন, 'উপজেলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার কাজ ছিল এমপি সাহিদুজ্জামানের। কিন্তু তিনি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে হাতেগোনা কয়েকজন অনুসারীকে নিয়ে নিজের আলাদা বলয় তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন। খোঁজখবর রাখেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।

দলে কোন্দল সম্পর্কে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান বলেন, 'উপজেলা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভাজন থাকতে পারে। তবে সবাই কেন্দ্রের আদেশ অনুযায়ী মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন ও তার হয়ে কাজ করতে বাধ্য থাকবেন।'

উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর- ২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে ছুটছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মখলেছুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এ এস এম নাজমুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরজাহান।

নিরুপায় হয়ে বিএনপিতে ঐক্য
২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি ৩২ সদস্য বিশিষ্ট মেহেরপুর জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুদ অরুণকে সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর আর নতুন কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি।

একসময় মেহেরপুর-১ আসনে জেলা বিএনপিতে তীব্র কোন্দল ছিল। জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আলমগীর খান ছাতু একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিতেন। অন্যপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান সভাপতি মাসুদ অরুণ। দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকায় ও হামলা মামলার কারণে এখন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। 

তবে আলমগীর খান ছাতু বলেন, 'এখনো কিছুটা ফারাক আছে।'

এ বিষয়ে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মারুফ হোসেন বলেন, '২০১৪ সাল থেকে মেহেরপুর, মুজিবনগর, গাংনী উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪৭টি মামলা হয়েছে। এখনো ৩৭ জন কারাগারে আছেন।'

জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ বলেন, 'দেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম লড়াই অব্যাহত থাকবে। এখন নির্বাচন নিয়ে আমরা ভাবছি না। সরকারকে উৎখাত করতে নিজেদের মধ্যে বিভেদ অনৈক্য ভুলে আন্দোলনে জোর দেওয়া হচ্ছে।'
 
২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রেজাউল হককে সভাপতি ও আসাদুজ্জামান বাবলুকে সাধারণ সম্পাদক করে গাংনী উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যের কমিটির ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর মুজিবনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামকে সভাপতি ও বদরউদ্দিন বিশ্বাসকে সাধারণ সম্পাদক করে মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, 'একাধিক মামলা হয়েছে মুজিবনগর বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে। তারপরও
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে মুজিবনগর উপজেলা বিএনপিতে। নির্বাচনের পরিবেশ যদি তৈরি হয়ে তবে মাসুদ অরুন মেহেরপুর-১ আসনে একক প্রার্থী হবেন। তবে সহ-সভাপতি আলমগীর খান ছাতুও প্রার্থিতার জন্য আবেদন করবেন।'

মেহেরপুর- ২ (গাংনী) আসনে বিএনপিতে একসময়ে দুটি পক্ষ ছিল। একটি পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি আমজাদ হোসেন। অপরপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ।

গত ১৫ বছরে হামলা চালানোসহ আওয়ামী লীগ নানা ভাবে বিএনপির কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়েছে। পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই কাজে নানা ভাবে সহায়তা করেছে। ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গাংনী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এছাড়া নানা সময়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে বিএনপির কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২২ সালের ১৩ অগাস্ট বিএনপি ঘুরে দাঁড়ায়। ওইদিন কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে এলে ছাত্রলীগের ছেলেদের ধাওয়া দেয় গাংনী উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বিঘ্নে গাংনীতে মিছিল ও সমাবেশ করছে।

জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ বলেন, 'এক টানা ১৫ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে। মামলা, হামলা, হয়রানির শেষ নেই। এখনো সকাল হলেই আদালতের বারান্দায় নেতাকর্মীদের যেতে হচ্ছে। অনেকে জেলে রয়েছেন। এরপরও দেশ রক্ষায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি রাজপথে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। বিএনপির লক্ষ্য এখন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো। আন্দোলন সফল হলে বিএনপির প্রার্থিতা চূড়ান্ত করবে দল। দল তখন যাকে মনোনয়ন দেবে তার হয়ে নির্বাচন করবে সকলে।'

বৃহত্তর আন্দোলন করার প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'আগের চেয়ে বিএনপি এখক অনেক মজবুত। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ক্ষমতাসীন সরকারকে জনগণ আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলবেন। এখন নিজেদের মধ্যে বিভেদ করার সময় না। সমবেত হয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করতে হবে।'

এই দুই দলের বাইরে জামায়াতে ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে জেলাতে। একটানা ১৫ বছর গোপনে জামায়াতের দলীয় কার্যক্রম চললেও সম্প্রতি তারা জেলা শহরের আশপাশে মিছিল ও সভা করেছে। 

জেলা জামায়াতের আমির তাজুল ইসলাম খান বলেন, 'এই সরকার ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামকে শেষ করে দেওয়া চেষ্টা করেছে। এরপরও জামায়াত সারাদেশে সক্রিয় রয়েছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা হলে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,