For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

সরকারি খালের মাটি বিক্রি করছেন ইউপি চেয়ারম্যান

Published : Wednesday, 11 May, 2022 at 12:54 PM Count : 243

সাভারে সরকারি খাল ও কৃষি জমি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। 

গত ২০ মার্চ সাভারের উত্তর কাউন্দিয়া মৌজার আরএস ৬১৮৩ নং দাগের সরু খাল থেকে মাটির কাটা বন্ধের জন্য অভিযোগ প্রদানের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠেছে। 

লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সালেহপুর ব্রিজের পূর্ব পাশে অবস্থিত উত্তর কাউন্দিয়া মৌজায় কৃষি জমি ও খাল থেকে অন্তত ১০টি এক্সেভেটর (ভেকু) দিয়ে দেদারছে মাটি কাটছেন মাটি দস্যুরা। কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মাটি কেটে অন্তত ৫০টি ড্রাম ট্রাকে করে বিভিন্ন ইট ভাটায় সেসব মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। 

ঘটনাস্থলে মাটি কাটা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খোদ আমিনবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রকিব আহমেদ ওই মাটিখেকোদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়া তিনি সাবর আলী ওরফে সাবু নামে এক ব্যক্তির কাছে তিন লক্ষ টাকায় খালের মাটি বিক্রি করেছেন।
মাটি কেনার কথা স্বীকার করেছেন ক্রেতা সাবর আলী। 

গত ২০ মার্চ এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন খান আ. রশিদ, মো. জসিম উদ্দিন। তাদের পক্ষে ইউসুফ সাহেব নামে এক ব্যক্তি অভিযোগের কপিটি জমা দেন। অভিযোগের সঙ্গে আরএস নকশার কপি সংযুক্তি করে দেয়া হয়। 

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উত্তর কাউন্দিয়া মৌজার আরএস ৬১৮৩ নং দাগে সরু খালটি অবৈধ ভাবে খনন করে ইসলাম কোম্পানীর ইট ভাটাসহ বিভিন্ন ভাটায় লক্ষ লক্ষ টাকা মাটি বিক্রি করছেন পার্শ্ববর্তী বড়দেশী এলাকার মো. জুয়েল, সাবর আলী ওরফে সাবুসহ নাম অজানা ব্যক্তিরা। 

ঘটনাস্থলে গিয়ে পাওয়া যায় অভিযুক্ত সাবর আলী ওরফে সাবুকে। সরকারি খাল ও কৃষি জমির মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মাটিতো আমি একা কাটতেছিনা, এখানে ১০-১৫টি গ্রুপে অনেকেই মাটি কাটছে। লুৎফর কোম্পানী, রকিব চেয়ারম্যান, সাইদুল ইসলাম, মিন্টু মেম্বারসহ অনেকেই তো মাটি কাটতেছে, তাহলে শুধু আমার নামে অভিযোগ দেয়া হলো কেন? এটা অবশ্যই উদ্দেশ্যমূলক।'

খালের মাটি কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, 'খালের মাটি কাটতেছেন আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রকিব আহমেদ। আমি তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে খালের কিছু অংশ মাটি কাটার জন্য কিনেছি। এখনও আমি নিজের জমি থেকেই মাটি কাটতেছি। খালের মাটি এখনও কাটতে পারিনি। 

সরকারি খালের মাটি কেন কিনলেন জানতে চাইলে সাবর আলী বলেন, 'মাটি যেহেতু বিক্রি করা হচ্ছে- আমি না কিনলে কেউ না কেউ তো কিনবেই।'

খালের মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রকিব আহমেদ বলেন, 'যারাই ওখানে মাটি কাটছে সবাই আমার এলাকারই লোকজন। তবে আমি কোন মাটির ব্যবসা করি না। যে আমার বিরুদ্ধে খালের মাটি বিক্রির অভিযোগ করেছে তাকে আমি চিনিই না। সাবুতো সাবেক চেয়াম্যানের ভাই বেলায়েতের ব্যবসায়ীক অংশীদার। ওরাই তে এতো বছর ধরে খালের মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করে আসছে। আপনারা তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন।

আমিনবাজার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও এমআরবি ব্রিকসের মালিক সালাউদ্দিন মিন্টু বলেন, 'আমার জমির পাশ থেকে এমন ভাবে গর্ত করে মাটি কেটে নিয়ে গেছে এখন বৃষ্টি এলেই জমি ভেঙ্গে পড়ে যাবে। এছাড়া খালের মাটিও অনেক চওড়া করে কাটা হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি ঈলে পানির স্রোতে বাঁধ ভেঙ্গে গেলে আমার ভাটাটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি বিষয়টি জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ করলেও প্রায় দুই মাস হতে চললো এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমি হতাশ। যদি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও আমরা কোন প্রতিকার না পাই তাহলে এখন কোথায় যাব।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, 'মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,