১২৫ বছরেও আধুনিকায়ন হয়নি শমশেরনগর রেলস্টেশন
Published : Sunday, 25 December, 2022 at 5:03 PM Count : 401
মৌলভীবাজারের
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর রেলস্টেশন বিট্রিশ আমলে নির্মাণের পর থেকে এখন পর্যন্ত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। শতবছর পুরাতন স্টেশনটি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত ও ঝুকিপূর্ণ। দীর্ঘকাল অবহেলার কারণে রেলস্টেশনে কোন সংষ্কার করা হয়নি। বর্তমানে যেন যাত্রীদের গলারকাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্য বহনকারী স্টেশনটি সম্পন্ন নতুন করে নির্মাণ করার দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
জানা যায়, ইংল্যান্ডে গঠিত আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি ১৮৯৬ সালে কুমিল্লা-আখাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ স্থাপন করে। এসময় কুমিল্লা-আখাউড়া-শাহবাজপুর লাইনের স্টেশন হিসেবে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন তৈরি করা হয়। বর্তমানে স্টেশনে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী ৫টি ট্রেনের স্টপেজ থাকলেও টিকেট বরাদ্দ নাম মাত্র। ১২৬ বছরেও সংষ্কার বা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই স্টেশনে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও যাত্রীদের দাবী দ্রুত সময়ে স্টেশনটি সংষ্কার করে সকল ট্রেনের স্টপেজ ও টিকেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করার।
সরেজমিনে শমশেরনগর রেলস্টেশনে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলের নির্মিত স্টেশনের বর্তমান অবস্থা জরাজীর্ণ। রেলওয়ের স্টেশনটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। যাত্রীদের বসার জন্য নেই কোন ছাউনি। নামমাত্র একটি সোচাগার আছে, যার অবস্থা করুন। রেলস্টেশনের ভেতর ও আশপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। এমনকি পুরাতন দেয়ালে পড়েছে মরিচা। প্লাটফর্মের ছাঁদ দিয়ে পানি পড়ে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ট্রেনের নিয়মিত যাত্রীরা বলেন, শমশেরনগর রেলস্টেশনের অনেক জায়গা দখল হয়ে গেছে। স্টেশন যদি নতুন করে সংষ্কার করা না হয় তাহলে ভবিষ্যতে জায়গা আরও দখলে চলে যাবে। এতো পুরাতন একটি স্টেশন অথচ এখন পর্যন্ত কোন ভবনই নির্মাণ করা হয়নি। যাত্রী ছাউনির জায়গা অতি সংকির্ণ। বিভিন্ন কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকেট মাত্র ৮ থেকে ১০টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এখানে।
শমশেরনগরের স্থানীয় বাসিন্দা এবিএম আরিফুজ্জামান অপু বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে শমশেরনগর রেলস্টেশন আধুনিকায়ন করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। দেশের বিভিন্ন স্টেশন নতুনভাবে নির্মাণ করা হলেও আমাদের স্টেশন সেই ব্রিটিশ আমলের মতো রয়ে গেছে। দ্রুত সময়ে এই স্টেশনটি আধুনিকায়ন করার দাবি জানান তিনি।
শমশেরনগর রেলস্টেশন আধুনিকায়ন করার দাবি জানিয়ে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, এই স্টেশন থেকে সরকার প্রচুর রাজস্ব আদায় করলেও এখনও আধুনিকায়ন করা হয়নি। এই স্টেশন জেলার বিভিন্ন উপজেলার যাত্রীরা যাতায়াত করেন। শমশেরনগর রেলস্টেশনটি আধুনিকায়ন করে সকল ট্রেনের স্টোপেজ দেওয়া হোক। একইসাথে প্রথম শ্রেণির স্টেশনে রুপান্তর করা হোক।
শমশেরনগর রেলস্টেশনের সহকারী মাস্টার উত্তম কুমার দেব বলেন, এই স্টেশন টি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এখানে যাত্রীদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নেই। আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বরাদ্দ অনেক কম দেওয়া হয়েছে। প্লাটফর্মের ছাঁদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। সম্প্রতি সময় স্টেশনের ছাদ সংষ্কার করার জন্য প্রকৌশলীরা ভিজিট করে গেছেন। স্টেশনটি আধুনিকায়ন এর বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কুলাউড়া সেকশনের উর্ধ্বতন উপ সহকারী (কার্য) মো. জুয়েল হুসাইন বলেন, শমশেরনগর রেলস্টেশন নতুনভাবে নির্মানের জন্য ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যে হয়ে যাবে।
এসআর/এসআর