ধুঁকছে মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরী
Published : Thursday, 29 December, 2022 at 1:24 PM Count : 322
উদ্যোক্তাদের অনীহা ও বিসিক কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় যেনতেনভাবে চলছে মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরী। মেহেরপুরে শিল্পনগরী গড়ে ওঠার অপার সম্ভাবনা থাকলেও নানা সমস্যার কারণে গুটি কয়েক খুদ্র কারখানায় কোন রকমে টিকে আছে বিসিক শিল্পনগরী।
২০০৬ সালে থেকে চালু হওয়া এই শিল্পনগরী মাত্র ৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিয়ে পথ চলছে। ক্ষুদ্র পুঁজিতে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের পুলিশ লাইনের সামনে ১০ একর জমির ওপর ২০০৬ সালে ৭০টি প্লট নিয়ে চালু হয় এই বিসিক শিল্পনগরী। এ পর্যন্ত এখানে ৩৫টি শিল্প ইউনিটের জায়গায় ৬৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়। খালি আছে ২টি প্লট। ২০১৪ সালের মধ্যে ৬৪টি প্লটই বিক্রি হয়ে যায়।
শর্ত অনুযায়ী ১৮ মাসের মধ্যে উদ্যোক্তাদের উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও ২০১৬ সালের মধ্যে চালু হয় মাত্র ৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ২টি প্রতিষ্ঠান চালুর ২ বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। পরে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠান চালু হয়। বর্তমানে ৯টি কারখানা কোনো রকমে টিকে আছে।
উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা ছিল বিসিকে তার কোনোটিই পাচ্ছেন না তারা। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ, ড্রেনেজ, সীমানা প্রাচীর, নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যা রয়েছে এখানে। তাছাড়া কর্মকর্তাদের সহযোগিতাও তেমন একটা পাওয়া যায় না। তাই ইচ্ছা থাকলেও এখানে অনেকেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ভরসা পাননা। শর্ত অনুযায়ী ১৮ মাসের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া প্লটে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে না পারলে বরাদ্দ বাতিলের নিয়ম থাকলেও বিসিক কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে নতুন উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার যে কারখানাগুলো বন্ধ সেগুলোর খোঁজখবর রাখে না বিসিক কর্মকর্তারা। রাতে মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাচ্ছে। নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম খোকন বলেন, বিসিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে বিসিকে কোনো শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠছে না।
মেহেরপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল এনাম বকুল বলেন, উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ সুবিধা দিলে আরও শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতো। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হতো। আমাদের বাণিজ্যিক অবস্থা এগিয়ে যেত।
মেহেরপুর বিসিক শিল্পনগরীর ব্যবস্থাপক ( ভারপ্রাপ্ত) মো. ইব্রাহিম খলিল জানান, প্লট কিনে যারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন না তাদের গত ৩০ আগস্ট কাজ শুরু করা ও বকেয়া সার্ভিস চার্জ পরিশোধেরে নোটিশ দেয়া হয়েছে । শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে বিসিকের ৫০ লক্ষ টাকার অধিক সার্ভিস চার্জ বকেয়া রয়েছে। তবে যাদের এখানে প্লট রয়েছে তারা শিল্প গড়তে নয় অধিক দামে অবৈধ্যভাবে প্লট বিক্রয়ে আগ্রহী।
বিসিক কর্মকর্তার মতে, বর্তমানে বিসিক এলাকায় সীমানা প্রাচীর না থাকাতে মাঝেমধ্যে ছোটখাটো চুরি হচ্ছে। এমনকি মাদক সেবীদেরও আনাগোনা বেড়েছে। বিসিক ৪৭ হাজার টাকা পৌরকর দিয়েও পৌরসভার সহযোগিতা না পাওয়ায় অভ্যন্তরিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
আরএ/এনএন