যৌন হয়রানী: স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রীরা
Published : Saturday, 15 January, 2022 at 3:43 PM Count : 138
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার পর থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা।
অভিযুক্ত শিক্ষক ননী গোপাল হালদার (৫২) উপজেলার ৯৬ নং বটতলা চন্দনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ০৫ জানুয়ারি পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করলে সে বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি তার নানা-নানীর কাছে জানায়। এ ঘটনা প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষকের দ্বারা একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর বিষয় প্রকাশ্যে আসে। তবে ঘটনার পর থেকে ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
এ ঘটনায় যৌন হয়রানীর শিকার ওই ছাত্রীর নানা গত মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) তুহিন মন্ডলের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গত বুধবার (১২ জানুয়ারি) পঞ্চম শ্রেণীর ২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র পাঁচ জন ছাত্র বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল।
শনিবার সকালে ওই বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী চার শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, ময়না রানী শিকদার ম্যাডাম বিষয়গুলো জানতেন।
তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদার ইতোপূর্বে জয়বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকাকালীন সময় এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানী করে জনতার হাতে মার খেয়েছেন। ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে এই বিদ্যালয় বদলি হয়ে আসেন। ননী গোপাল হালদার তার প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে জাপটে ধরলে তিনি তাকে ঝাঁড়ুপেটা করেন। স্থানীয় এক বাসিন্দার মেয়ে সন্ধ্যায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মাঠে ওই মেয়েকে জাপটে ধরেন প্রধান শিক্ষক। মেয়েটি বাড়িতে ফিরে ঘটনাটি জানালে মেয়ের বাবা প্রধান শিক্ষককে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন।
প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল হালদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। রাজনৈতিক কারণে তিনি হয়রানী শিকার বলে দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ দেখতে পারিনি। অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) তুহিন মন্ডল বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।'
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, 'বিষয়টি জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টারের দায়িত্বরত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সজল মহলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
-এমএ