For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

প্রকল্পের সময় শেষ হলেও শুরুই হয়নি ৩টি ভবনের নির্মাণ কাজ

Published : Saturday, 15 January, 2022 at 4:11 PM Count : 447

“অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ” প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালীদশমিনায় আটটি “বীর নিবাস” নির্মাণ কাজের বরাদ্দ হয়। কিন্তু কার্যাদেশ বাস্তবায়নের সর্বশেষ সময়সীমা অতিক্রম হলেও তিনটি ভবনের নির্মাণ কাজ এখনও শুরু-ই করা হয়নি। পাঁচটি ভবনের নির্মাণ কাজ ৭০-৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

জানা যায়, ওই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির মাধ্যমে প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৮ টাকা যা পরবর্তীতে বর্ধিত হয়ে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা ব্যয়ে পাঁকা ভবন নির্মাণের নির্দেশ আসে। 

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন বরাদ্দ সংক্রান্ত অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। 

ওই কমিটি উপজেলায় অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট থেকে ১৯টি আবেদনপত্র পেয়ে সরেজমিনে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ১২ জনের নাম সুপারিশ করে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে ১২ জনের বিপরীতে আট জনের নামে ঘর বরাদ্দ আসে। 
জানা যায়, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রকাশ্য লটারীর মধ্য দিয়ে ২৬ অক্টোবর মেসার্স খন্দকার কনষ্ট্রাকশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. কামরুল খন্দকার উপজেলায় ওই প্রকল্পের আটটি পাঁকা ভবন নির্মাণের ঠিকাদার নির্বাচিত হন। যার কার্যাদেশ ০৪ নভেম্বর থেকে ০২ জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত উল্লেখ ছিল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রকল্পের আটটি ভবন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের সর্বশেষ সময়সীমা অতিক্রমের দুই সপ্তাহ পরও পাঁচটি ভবনের ৭০-৮০ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বাকি তিনটি ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু-ই করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এই তিনটি ভবন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল গণি হাওলাদার ও প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজেম আলী শিকদারের ছেলে নাসির শিকদারের নামে বরাদ্দকৃত।

জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. কামরুল খন্দকার অবজারভারকে বলেন, 'প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রবিউল হোসেন ওই তিনটি ভবনের কাজের সাইট আমাকে বুঝিয়ে দেননি।'

উপজেলার দশমিনা সদর ইউনিয়নের আরজবেগী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া বলেন, 'পিআইও রবিউল হোসেন আমাকে সন্ধ্যার পর দেখা করতে বলেছিলেন। আমি দেখা করিনি তাই আমার ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করেনি।'

উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের গুলি গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজেম আলী শিকদারের শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে নাসির শিকদার বলেন, 'আমার নামে বরাদ্দকৃত ঘরের নির্মাণ কাজ শুরুর ব্যাপারে পিআইও রবিউল হোসেন স্যারের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে শুধু দেখা করতে বলেন।'

উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের চাঁদপুরা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গণি হাওলাদারের ছেলে মো. ইয়াকুব হোসেন বলেন, 'আমি ঠিকাদারের কাছে কাজ শুরুর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন পিআইও রবিউল হোসেন স্যার কাজ শুরু করতে নিষেধ করেছেন।'

দশমিনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রবিউল হোসেন মুঠোফোনে অবজারভারকে বলেন, 'বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া বালু দ্বারা নতুন ভরাট করা জমিতে ঘর নির্মাণ করতে চাচ্ছেন। নতুন ভরাটকৃত জমিতে ঘর নির্মাণ করা নিষেধ- মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনার আলোকে তার ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারিনি। প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজেম আলী শিকদারের ছেলে নাসির শিকদারের জমি সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় ওই ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা যায়নি। এখন তার নামে ওই জমির নামজারী হয়েছে। এখন কাজ শুরু করা যাবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গণি হাওলাদার পূর্বে একটি ঘর পেয়েছেন যদিও সেটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নয় কিন্তু সরকারি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ওই ভবনের কাজ শুরু করা হবে। কাউকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলার বিষয়টি আদৌ সত্য নয়।'

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই প্রকল্পের বিভাগীয় উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রহমান মুঠোফোনে অবজারভারকে বলেন, 'আমি যতদূর জানি এই মুহুর্তে ওই তিনটি ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করার উপযুক্ত পরিবেশ নেই।'

পিআইও দেখা করতে বলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ পরিদর্শন ও মনিটরিং করি। এমন অভিযোগ কোন বীর মুক্তিযোদ্ধা করলে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত), আবাসন বরাদ্দ কমিটির সভাপতি ও দশমিনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার আবদুল কাইয়ুম বলেন, 'আমি প্রত্যেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কঠোর ভাবে কাজ মনিটরিং করি। ওই তিনটি ভবন নির্মাণে একটু জটিলতা রয়েছে। এ বিষয়ে কেউ কাউকে দেখা করতে বলার কোন সুযোগ নেই। সম্মানীত বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমার কাছে এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ করলে আমি অবশ্যই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,