For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

শীঘ্রই শুরু হচ্ছে রংপুর হাইটেক পার্কের কাজ, এখনও জমির টাকা পায়নি কৃষক

Published : Friday, 20 May, 2022 at 7:56 PM Count : 516

দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে রংপুরের খলিশকুড়ি এলাকায় বহুল প্রতীক্ষীত হাইটেক পার্কের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ২৬ মে এই পার্কের কাজ শুরুর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।  
ইতোমধ্যে লোকনিয়োগ কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত জমি অধিগ্রহনের টাকা বুঝে পায়নি অভিযোগ মালিকানাধীন কৃষকদের।
 
তবে উদ্বোধনের কথা শুনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। অনেকেই এখন পর্যন্ত বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না। আবার অনেকেই ভাবছেন এবারও কেবল শান্তনার বানী শোনাচ্ছেন সংশ্লীষ্টরা।

স্থানীয় যুবক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, শুনেছি এমাসেই কাজ শুরু হবে। এখানে ইতোমধ্যেই প্রকল্পের লোকেরা যাতায়াত করছেন। এখনও জমি অধিগ্রহনের টাকা বুঝে পায়নি কৃষকেরা। তবে আজই কৃষকদের তালিকা করার জন্য লোক এসেছিল।

খলিশাকুড়ির মুজাহিদ নামের আরেকজন বলেন, আমাদের এলাকায় হাইটেক পার্ক হবে এটা আনন্দের বিষয়। স্থানীয়রা খুবই খুশি। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষাতেও যখন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি তখনই হাতশ হয়েছি আমরা। প্রকল্পটি হলে এই এলাকার আর্থ সামাজিক দৃশ্যপট অনেকটা পরিবর্তিত হবে।

প্রকল্পের বিষয়ে আরো জানা যায়, ইতোমধ্যেই লোকনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৪৫ জন। এদের মধ্যে অনেকেই এখন অবস্থান করছেন এই এলাকায়।

মো: রতন সরকার নামের এক যুবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২ মাস আগে তার নিয়োগ হয়েছে অফিস সহকারীর হিসেবে। এছাড়াও ওয়ার্ক এসিস্টেন্ট হিসেবে যোগ করা আবু সাইদও বাড়ি ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছেন ফুল আমের তল এলাকায়। ২জনই কাজ উদ্বোধনের কথা স্বীকার করেন।

রংপুর নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশাকুড়িতে প্রায় ৯ একর খাস জমি হাইটেক পার্ক বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ দেয় রংপুর জেলা প্রশাসন। এরপর প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন, মাপজোক ও মাটি পরীক্ষার পর আর কোনো অগ্রগতিই ঘটেনি। অ্যাপ্রোচ সড়কের জমি অধিগ্রহণে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এর কার্যক্রম এতদিন মুখ থুবড়ে পড়ে। পার্কের জমিতে প্রবেশের কোন পথ না থাকায় গত বছরে ২৬ জুলাই ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সিরাত মাহমুদা স্বাক্ষরিত রংপুর জেলা প্রশাসকর কাছে পাঠানো পত্রে আরও ২ একর ১৮ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের জন্য রংপুর জেলা প্রশাসককে বলা হয়।

খলিশাকুড়ি এলাকায় দেখা যায়, হাইটেক পার্কের জন্য অধিগ্রহণ করা ৮ দশমিক ৫৯ একর জমি পিলার আর কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। মৌসুমের পাকা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। অধিগ্রহণ করা জমির পাশে সড়কের ওপর টাঙ্গিয়ে রাখা হয়েছে প্রকল্পের তথ্য সংকলিত একটি সাইনবোর্ড।

নকশানুযায়ী তিনটি ভবনের মধ্যে একটি হবে স্টিল স্ট্রাকচারে তৈরি ৭ তলাবিশিষ্ট মাল্টিটেনেন্ট ভবন। এছাড়া দুইটি ৩ তলাবিশিষ্ট ক্যান্টিন ও এ্যাস্ফিথিয়েটার ভবন (স্টিল স্ট্রাকচার) এবং ডরমিটরি ভবন (আরসিসি) থাকবে।

হাইটেক পার্ক বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রংপুরে কর্মসংস্থান হবে ৫ হাজার তরুণ-তরুণীর। এখানকার অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। তবে দীর্ঘ ৫ বছরের অপেক্ষার পরও করে নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় অনেকখানি হতাশ পরে স্থানীয়রা।

২০১৯ সালের আগস্টে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে হাইটেক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিচালক হোসনে আরা বেগম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রকল্পটি ভারত সরকারের সহায়তায় হচ্ছে। আমরা এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়াতে সকল কাগজপত্র পাঠাই। সেখান থেকে চলে যায় ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে। এসব প্রসেসের জন্য প্রকল্পের কাজে ধীরগতি এসেছে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. আবু কালাম ফরিদ উল ইসলাম জানান, হাইটেক পার্ক বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও যুবকরা কাজের সুযোগ পাবে। তথ্যের প্রসার ও আইটি বিভাগ আরও প্রসারিত হবে। বাংলাদেশে সফটওয়্যার শিল্পের আরও বিকাশ ঘটাবে। রাজস্ব আয়ে এ পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরো বলেন, হাইটেক পার্ক করলেই হবে না। এর শতভাগ মনিটরিং দরকার। তাহলেই এখান থেকে যুতসই সুবিধাদি প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকবে।

রংপুর হাইটেক পার্ক প্রকল্পের এডিপি শফিক উদ্দিন ভুইঞার সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।  তবে আগামী ২৬ মে রংপুর হাইটেক পার্কের কাজের উদ্বোধনের সত্যতা স্বীকার করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল সারাদেশের জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে রংপুর হাইটেক পার্কের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ১৫৪ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা ধরা হয়। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,