For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

তেঁতুলিয়ায় গো-খাদ্য সঙ্কট, বিপাকে খামারিরা

Published : Thursday, 24 February, 2022 at 1:18 PM Count : 191

চা বাগান অধ্যুষিত অঞ্চল উত্তরের সীমান্তবর্তী পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়াপজেলা। বিগত দুই দশকে চা শিল্প বিপ্লবের কারণে বাড়ির আঙিনাতেও ভরে উঠেছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চা বাগান। এতে করে কমে গেছে গো চারণভূমি। চারণভূমি না থাকায় গবাদী পশু পালনে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

অন্যদিকে রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারে মেরে ফেলা হচ্ছে সবুজ ঘাস। গো-খাদ্যে সঙ্কট ও চড়া দামের কারণে বিপাকে পড়েছে কৃষক ও খামারিরা।

খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ উপজেলায় চা বিপ্লবের পর থেকেই চারণভূমি সঙ্কটে পড়েছেন তারা। বিষাক্ত কিটনাশক ব্যবহার করে আগাছার মতো প্রয়োগ করা হচ্ছে ঘাসে। যার কারণে সবুজ ঘাস মিলছে না। আর বাজারগুলোতে যেসব গো-খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে তা দামে চড়া। ঘাস, খড় ও ভুসিসহ সব কিছুই অতিরিক্ত দামে কিনে গরু, ছাগল, ভেড়া লালন-পালন করছেন।

কৃষকরা জানান,  অনেকের হাতে টাকা নেই। কেউ কেউ লতাপাতা, তরকারির খোসা, ফেলে দেওয়া শাক ও বাজারে ফেলে দেওয়া তরিতরকারি কুড়িয়ে এনে খাওয়াচ্ছেন। 
ঘাসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালিন সময়ে বিভিন্ন প্রকার সবজি পাতাকপি, কপির পাতা গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি হতে দেখা যায়। আবার ক্ষেতে ফল আসার আগেই ভুট্টা ও গমের গাছ কেটে কেটে বাজারে চড়া দামে বিক্রয় করছেন অনেকে। জানা গেছে, কৃষকরা লাভবানের আশাতেই বাজারে নিয়ে আসছেন। আর চড়া দামেই কিনে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতা খামারিরা। 

বাজারে গিয়ে দাম হিসেবে দেখা যায়, গমের আটি ১৫-২০ টাকা, ভুট্টা গাছের আটি ২০-২৫ টাকা, নেপিয়ার ঘাস আটি ১৫-২০ টাকা, ধানের শুকনো খড়ের আটি ৮-১০ টাকা, নেপিয়ার ঘাসের আটি ১৫/২০ টাকা। ঊর্ধ্বমূল্যে এসব গো-খাদ্যের কারণে গরু/ছাগল/ ভেড়া নিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। 

ঘাস বিক্রেতা রেজাউল ও জহুরুল জানান, কৃষকদের কাছে আমরা বেশি দামে ধানের শুকনো খড়, পাতাকপি, কফির পাতা, নেপিয়ার ঘাস কিনতে হচ্ছে। এই সময় সবুজ ঘাসের খুবই সংকট। বেশি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রয় করতে হচ্ছে। তবে খামারিদের ঘাস কিনে গরু/ছাগল পালন করা খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলায় ৭০ হাজার গরু, প্রায় দেড়লাখ ছাগল, ভেড়া ৫ শতাধিক ও মহিষ আড়াই শত পালন করা হচ্ছে। রেজিস্ট্রার খামারি রয়েছেন শতাধিকের বেশি। এসব কৃষকরা গো-খাদ্যের সঙ্কটের কারণে পশু লালন-পালনে খুব বিপদের মধ্যে। তাদের প্রতিদিন গো-খাদ্য কিনতে হচ্ছে দ্বিগুন দামে। বাজারে দোকানগুলোতে দানাদার খাদ্য ভুসি, খইল, ফিডসহ বেশ দাম। 

ডেইরি খামার এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হানিফ বলেন, এ এলাকায় চা বাগান বৃদ্ধির কারণে কোনো ফাঁকা মাঠ নেই। যার কারণে সবুজ ঘাস মিলছে না। আর বাজারে যেসব গো-খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে অনেক খামারি তাদের খামার ছোট করে আনছেন। বাজারে দুধের দামও কম। তাই গো-খাদ্যের চড়া দামে কিনে লোকসানেই পড়তে হচ্ছে। তবে যেসব খামারিদের জমি রয়েছে, তাদের নেপিয়ার ঘাস উৎপাদনে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।  

উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের ফিরোজা আক্তার, আফরোজা ও আছমা খাতুন তারা প্রত্যেকে ১৫-২০টি ছাগল পালন করছেন। তারা জানান, চারণ ভূমি না থাকায় বাড়িতেই পালতে হচ্ছে। সবুজ ঘাস পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। শুকনো খড়ও খাওয়াতে হচ্ছে। কিন্তু খড়েরও অনেক দাম। বেড়ে গেছে খইল ভুসি ও ফিডের দামও। পর্যাপ্ত খাবার নিতে পারায় ছাগল বিক্রি করে দেয়ার কথা ভাবছেন তারা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মাহবুবুর রহমান জানান, আগে এ এলাকায় যেসব জায়গাগুলো গো-চারণ ভূমি ছিল তা এখন  চা শিল্প বিপ্লবের পর পতিত জমিগুলো চা বাগান হওয়ায় চারণভূমি কমে গেছে। এ জন্য গবাদী পশু বিচরনের ভূমি কমে গেছে। সবুজ ঘাস পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না। তবে প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে কৃষকদের গো-খাদ্য উৎপাদনে উন্নতমানের নেপিয়ার ঘাস লাগানোর জন্য উৎসাহ, পরামর্শ, প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন। যাতে করে গো-খাদ্যের সংকট কাটানো সম্ভব হয়।

-এসকে/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,