For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

পদ্মায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন চলছে

Published : Thursday, 1 December, 2022 at 12:00 PM Count : 280

রাজবাড়ীগোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। নদী থেকে বালু তুলতে সরকারের অনুমতির নিয়ম থাকলেও প্রভাবশালী ওই মহল কোন কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

অন্যদিকে, বেপরোয়া বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকাসহ আশপাশের ফসলি জমি। গত তিন বছরে সাত হাজার ১০৫টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। এই উপজেলার এক পঞ্চমাংশ নদীগর্ভে বিলীন হলেও বালু খেকোরা থেমে নেই। স্বনামে বেনামে চলছে বালু উত্তোলন।

এছাড়া, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে সরকার প্রায় এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকার মহাপ্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে। যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন সেটাও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে বালু খেকোদের কারণে। নদী ভাঙ্গণের কারণে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলছে ঘাটকে রক্ষা করার জন্য। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের তথ্যমতে, পদ্মা নদীর ভয়াল গ্রাসে ২০১৭ সালে এক হাজার ৯১৫টি, ২০১৮ সালে দুই হাজার ৭০টি এবং ২০১৯ সালে তিন হাজার ১২০টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এই অঞ্চলের অনেক গ্রাম। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার সাত নম্বর ফেরিঘাটের পাশেই দুটি ভেকু দিয়ে মাটি তুলে ট্রাকে দিচ্ছে এবং সারি সারি ট্রাক দাঁড় করানো আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ ট্রাক বালু এখান থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে এই অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর ধুলাবালিতে পরিপূর্ণ এবং রাস্তাঘাটের চিহ্নও নেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ফেরিঘাটসহ পুরো এলাকাটি রয়েছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। হয়তো সামনের বর্ষায় বিলীন হয়ে যাবে ঘাটসহ গ্রামটি। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে এবং ভেকু দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিকারে বালু উত্তোলন চলছে। এতে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গণ সৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে কৃষি জমি ও বসতভিটাও পড়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি সারা দিন ট্রাকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের মানুষ। অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষমতাসীন ব্যক্তি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের সামনে অবৈধ বালু উত্তোলন হলেও নেওয়া হচ্ছে না কার্যকরী কোন ব্যবস্থা।

বালু উত্তোলনকারীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানের নির্দেশে তারা বালু উত্তোলন করছেন।  তাছাড়া সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে জানে। 

বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রহমান মন্ডল বলেন, 'সরকারি রাস্তার কাজে এই বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তাটি আমার ইউনিয়নের জন্য দরকার।'

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা-৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্য সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। 

উপজেলা প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, 'এভাবে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। ঠিকাদার রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজনে বালু দরকার হলে কিনবে সে জন্য তার অর্থ বরাদ্দ রয়েছে।'

এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন অবজারভারকে বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে। 

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,