For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাজশাহীতে ৪২০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

Published : Tuesday, 18 October, 2022 at 7:11 PM Count : 127

রাজশাহীতে এক হাজার ৫৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৪৩৮টি প্রতিষ্ঠানে। ৪২০টি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নেই। ১৯৩ জন সহকারী শিক্ষক অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে সমন্বয়হীনতা ও ছোট ছোট কাজেও দীর্ঘসূত্রিতার তৈরি হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে এক রকম অভিভাবক শূন্যতায় প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আসছে না।

এছাড়া, অবকাঠামো, খেলার মাঠসহ অপর্যাপ্ত শিক্ষক সমস্যায় জর্জরিত রাজশাহীর প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যার ব্যবধান অনেক। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকের ঘাটতিও প্রকট। একজন শিক্ষককে একাধিক দায়িত্ব নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা চাইলেও ক্লাসে সবার প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন না। ফলে শিক্ষার্থীরাও ভালো শিখতে পারে না।
গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা পুরোটাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ভর। অধিকাংশ পরিবারের বাইরে টিউশনি দেয়ার আর্থিক সক্ষমতা নেই। আবার অভিভাবকরাও তেমন সচেতন না। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো বিশেষ ভাবে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বেশি। যেটা শহর ও গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার বৈষম্যকেও স্পষ্ট করছে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দূরীকরণে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ২০১৭ সালে রাজশাহীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিলো এক হাজার ৪৪টি। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭টিতে। ২০১৭ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল ২৬৬টি। সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ছিলো আরও ২৫০টির। আর ২০২২ সালের অগাস্টে এসে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্যা ৪২০টি।

মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় অবস্থিত সরকারি ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের নেই আটটি প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া, গোদাগাড়ীতে ১৬৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৩১টি, চারঘাটের ৭৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৪৫টি, তানোরে ১২৮টির মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৭২টি, দুর্গাপুরে ৮৩টির মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৩১টি, পুঠিয়ায় ৯০টির মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৩৯টি, পবায় ৮৩টির মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৩৩টি, বাগমারায় ২২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ১০১টি, বাঘায় ৭৪টির মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৩০টি এবং মোহনপুরে ৮১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ৩০টি।

শুধু প্রধান শিক্ষকই নয়- নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষ ট্রেনিংপ্রাপ্ত শিক্ষকের ঘাটতিও রয়েছে। মহানগরীর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মাত্র ছয় দিনের ট্রেনিং দিয়েই সংগীত ও শরীরচর্চার ক্লাস নিতে হচ্ছে অন্যান্য শিক্ষকদের। অনেক প্রতিষ্ঠানেই নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। শিশুদের খেলাধুলার জন্য নেই খেলার মাঠ। 

এতে শিক্ষার পরিবেশ আনন্দের না হয়ে এক ঘেয়েমির হয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করছেন অনেক অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হেলেনা পারভীন জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে কোন প্রধান শিক্ষক নেই। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না থাকায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে বেগ পেতে হচ্ছে।

মহানগরীর গোলজারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজা খাতুন জানান, বিদ্যালয়ে পাঁচটি ক্লাস রুম এবং প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ জন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করছেন। এখানে আরও অন্তত দু'জন শিক্ষক দরকার। সেটা নেই। এ কারণে দুই শিফটে ক্লাস নিতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ঘাটতি প্রতি মাসেই বাড়ছে। প্রতি মাসেই কেউ না কেউ অবসরে যাচ্ছে। কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। বিদ্যালয়গুলোতে থেকে চাহিদা আসছে। নানা সমস্যার কথা বলছেন। কিন্তু এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ ছাড়া তেমন কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম জানান, শিক্ষকের ঘটতি আগামীতে আর থাকবে না। প্রায় ৬০০ জনের মতো সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দ্রুতই হচ্ছে। আর যারা সহকারী শিক্ষক পদে আছেন, তাদের পদায়নও দ্রুতই হবে। অবকাঠামোগত সমস্যা নেই বললেই চলে। যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে আছে সেখানে প্রকল্প প্রস্তাবনাও চলে গেছে। আর শহরের কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব খেলার মাঠ নেই। জায়গা না থাকায় সেটা এখন সম্ভবও হচ্ছে না। এছাড়া, গ্রামের প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ নিয়েও তেমন সমস্যা নেই। 

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,