For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

কেন্দুয়ায় এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব দাবি তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের

Published : Monday, 5 September, 2022 at 11:59 AM Count : 319

নেত্রকোণায় তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাসুম আহম্মেদ নামে এক শিক্ষার্থীকে নিজেদের ছাত্র বলে দাবি করেছে।

জোলার কেন্দুয়ার আশুজিয়া ইউনিয়নে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, বর্তমানে তার বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী মাসুম আহম্মেদ।

একই এলাকার অন্য একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২১ সালে ওই শিক্ষার্থী তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে অটোপাস করে বেরিয়ে গেছে।

আবার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হিসেবে এলাকার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নাম রয়েছে মাসুমের। এ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর 'ছাত্রত্ব' দাবি করছে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদ আশুজিয়া ইউনিয়নের সিংহেরগাঁও গ্রামের মৃত গণি মিয়া ও কুলসুমা আক্তার দম্পতির সন্তান।

স্থানীয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের (মাধ্যমিক বিদ্যালয়) পরিচালনা কমিটির নারী অভিভাবক সদস্য পদে কুলসুমা আক্তার প্রার্থী হওয়ার পর তার ছেলে মাসুম আহমেদের ছাত্রত্ব নিয়ে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এ টানাটানির বিষয়টি এখন আলোচিত হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের পরিচালনা কমিটির ৪টি পুরুষ ও ১টি নারী অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার। এ নির্বাচনে নারী অভিভাবক সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদের মা কুলসুমা আক্তার। ইতোমধ্যে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দও দেয়া হয়ে গেছে। কুলসুমা আক্তার আনারস প্রতীক নিয়ে ৯৭৬ জন ভোটারের কাছে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দোয়াত কলম প্রতীকের আনোয়ারা আক্তার গত ৩১ আগস্ট কুলসুমা আক্তারের অভিভাবক সদস্য ভুয়া উল্লেখ করে তার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর এক লিখিত আবেদন করেন।

এদিকে নারী অভিভাবক সদস্য পদের আনোয়ারা আক্তারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটির তদন্তে সরজমিনে যান নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজাহারুল ইসলাম।

সিংহেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন জানান, মাসুম আহমেদ ২০১৭ সালে আমার বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। পরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে হঠাৎ স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। পরবর্তীতে ২০২১ সালে পুনরায় সে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। বর্তমানে মাসুম আহমেদ আমার বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেণির নিয়মিত একজন শিক্ষার্থী। তার রোল নং ৪২। তার নামে উপবৃত্তিও রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সে নিয়মিত ক্লাস করেছে। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে তার অনুপস্থিতি পরিলক্ষিত হলে মোবাইল ফোনে তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করা হয়। পরে তার মা মে মাসের ২২ তারিখ মাসুমকে নিয়ে স্কুলে আসেন। এরপর অদ্যাবধি সে স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছে।

এ নিয়ে কথা হলে শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো. এজাহারুল ইসলাম জানান, আশুজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার (অটোপাস) সনদপত্র নিয়ে শিক্ষার্থী মাসুম আহমদে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি আমার বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় এবং সে আমার বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। সে হিসেবে তার মা কুলসমা আক্তার একজন অভিভাবক সদস্য হয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তিনি বৈধ। তবে ঘটনার বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত যা দেওয়ার ইউএনও মহোদয়ই দিবেন বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি নিয়ে আশুজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেন জানান, আমি এখানে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানি না। বিষয়টি সম্পর্কে শ্রেণি শিক্ষক নাজমা আক্তার ভালো বলতে পারবেন।

এ সময় শ্রেণি শিক্ষক নাজমা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থী মাসুম আমার চাচাতো ভাই। করোনাকালীন সময়ে তার মায়ের অনুরোধে ২০২১ সালে আমি তাকে আমাদের বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করি এবং একই বছর এখান থেকে সে অটোপাস করে আশুজিয়া জয়নাথ করোনেশন ইনস্টিটিউশনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়।

এ বিষয়ে কথা হলে ঘটনাটির তদন্তকারী সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, রোববার সারাদিন আমি শিক্ষার্থী মাসুম আহমেদের ছাত্রত্ব নিশ্চিত করতে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি এবং প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করেছি। আমি ইউএনও মহোদয়কে এসব অবগত করব এবং এ ঘটনায় ইউএনও মহোদয়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তাসলিমা বেগম লিপি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমি তিনদিনের ছুটিতে ঢাকায় আছি। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।

এইচকে/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,