For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

বদলির পরও পুরানো কর্মস্থলে অফিস করছেন শাহিনুর বেগম

Published : Thursday, 2 June, 2022 at 3:44 PM Count : 284

বরগুনাবেতাগীতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগমের স্ট্যান্ড রিলিজের পরও গোপনে পুরানো কর্মস্থলে এসে অফিস করছেন। 

বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনি অফিস করেন। 

বদলির আদেশ উপেক্ষা করে নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে পুরানো কর্মস্থলে অফিস করায় স্থানীয়দের মাঝে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। 

জানা গেছে, গত ২৩ মে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বেতাগী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগমকে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় বদলি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে ৩০ মে ২০২২ এর মধ্যে তাকে নতুন কর্মস্থল থানচিতে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়। অন্যথায় ৩০ মে অপরাহ্ন থেকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হিসেবে গণ্য হবেন বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু উল্লেখিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হলেও তিনি তার নতুন কর্মস্থলে এখনো যোগদান করেননি। বরং পুরানো কর্মস্থলে এসে গোপনে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
বদলীকৃত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগম বেতাগীতে গোপনে অফিস করছেন এমন খবর পেয়ে বুধবার তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শাহিনুর বেগমের অফিস কক্ষটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রয়েছে। পাশের অন্য একটি রুমে তিন জন মহিলা অবস্থান করছেন। কথা বলার উদ্দেশ্যে তাদের কাছে গিয়ে দেখা যায় শাহিনুর বেগম মুখে ওড়না পেচিয়ে সাধারণ একটি চেয়ারে বসে অফিসের কাজ করছেন।

এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। স্ট্যান্ড রিলিজের পরও তিনি কিভাবে অফিস করছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি কক্ষ ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত একাধিক কর্মচারী বলেন, শাহিনুর বেগমকে গত ২৩ মে বান্দরবানের থানচিতে বদলি করা হয়। গত মঙ্গলবার বরগুনা জেলা অফিস থেকেও তাকে অব্যাহতিপত্র দেওয়া হয়। তারপরও তিনি কোন আইনের বলে অফিস করছেন তা জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, 'এখানকার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগমকে ইতোমধ্যে বান্দরবনের থানচিতে বদলি করা হয়েছে। ৩০ মে‘র মধ্যে তার পুরানো কর্মস্থল ত্যাগ করার কথা। এখন কোন অবস্থাতেই তার আর এখানে অফিস করার সুযোগ নেই।'

জানা গেছে, শাহিনুর বেগম ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর এই উপজেলায় যোগ দেন। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলা শহরে। যোগদানের পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ নিতে আসা প্রশিক্ষণার্থী ও মাতৃত্বকালীন দরিদ্র মায়েদের ভাতা প্রদানে অনিয়ম, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ও দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে জাতীয় পত্রিকায় কয়েকটি সংবাদও প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিভিন্ন ট্রেডে তিন মাস মেয়াদী কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য দর্জি বিজ্ঞান ট্রেডে ৩০ জন, ব্লক বাটিক ট্রেডে ২৫ জন এবং পার্লার ট্রেডে ২৫ জনসহ প্রতি ব্যাচে ৯০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গ্রামীণ নারী জনগোষ্ঠীকে আত্মনির্ভরশীল করার লক্ষ্যে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। একটি ট্রেডের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই প্রশিক্ষণার্থীকে অন্য একটি ট্রেডে আবার প্রশিক্ষণ করানোর অভিযোগ রয়েছে। 

দপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত করা প্রশিক্ষণার্থীকে একই ট্রেড বা অন্য ট্রেডে ভর্তি করা নিয়ম নেই। কিন্তু জনপ্রতি প্রশিক্ষণার্থীর নিকট থেকে তিনি ৫০০-১০০০ টাকা নিয়ে অনিয়ম করছেন।

তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের ছয় হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হয়। ভাতা প্রদানের মাস্টার রোলে স্বাক্ষর না নিয়ে শুধু ১০ টাকা মূল্যের রেভিনিউ এর উপর স্বাক্ষর রেখে টাকা প্রদান করা হয়।

একাধিক প্রশিক্ষণার্থী অভিযোগ করেন, কোন প্রশিক্ষণার্থীকেই পুরো টাকা দেয়া হয়নি। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের নিকট থেকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহীনুর বেগম ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কর্তন করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী একজন বলেন, অনেক প্রশিক্ষণার্থী নিয়মিত কাজ শিখতে আসে না। শুধু ভাতা নেওয়ার সময়ে এসে শাহিনুর বেগমের সঙ্গে টাকা ভাগাভাগি করে হাজিরা নিশ্চিত করে প্রশিক্ষণে বরাদ্দকৃত টাকা নিয়ে যায়। এছাড়া ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ২২৮ জনের মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাৎ করেন। এসব নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বর মাসে সুনির্দিষ্ট কারণ দর্শানোর চিঠি দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোন কারণের সুনির্দিষ্ট জবাবও দিতে পারেননি মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগম।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,