For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

মশারি জালে রেণু শিকার, নির্বিকার প্রশাসন

Published : Thursday, 26 May, 2022 at 3:01 PM Count : 408

প্রতিদিন জোয়ার-ভাটায় মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মশারি জাল দিয়ে চিংড়ির রেণু শিকার করছে শিশু ও নারী-পুরুষ। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নদীতে পোনা ধরা নিষিদ্ধ। যদিও তা মানছেন না ভোলাচরফ্যাশনের রেণু শিকারীরা।

নিষিদ্ধ জালে অপরিকল্পিত ভাবে ধরা বাগদা ও গলদার রেণুগুলো রেখে অন্যান্য মাছের রেণু ও ডিম মাটিতে ফেলে দেয়। এতে ধ্বংস হচ্ছে জলজ জৈব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার রেণু শিকার ও বেচাকেনা হলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা স্থানীয় প্রশাসন।

তবে মৎস্য বিভাগের দাবি, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের জেল জরিমানাসহ রেণু ধরা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত এ রেণু শিকারের কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু, ডিম ও উন্মুক্ত জলাশয়ের পোকা-মাকড় মারা যাচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে জলজ জৈববৈচিত্র ও পরিবেশ। উপজেলা মৎস অফিস বলছে, চিংড়ির রেণু ধরা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বেতুয়া নতুন স্লুইস গেটের দক্ষিণ পাশে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় গলদা চিংড়ির রেণু আহরণ করছেন ৪০-৫০ জেলে। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

মেঘনা নদীর পাড়ে গলদা চিংড়ি রেণু বাছাইয়ে কাজ করেন স্থানীয় বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম (৩৬)। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গলদা চিংড়ি পোনা ৫০ পয়সা করে বিক্রি করেছি। এ পোনা ধরা যে অবৈধ, তা শুনেছি। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পেটের দায়ে রেণু ধরতে হচ্ছে।’

একই কথা বললেন চিংড়ি রেণু আহরণকারী মো নাজিম (১২) ও মুনতাসির (১৩)। 

নদী পথের বোরহানউদ্দিন হাকিমুদ্দিন ও হাসান নগর ইউনিয়নের একই দৃশ্য। প্রতি মৌসুমে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা বুড়াগৌরাঙ্গ নদী থেকে চিংড়ি রেণু আহরণ করেন চর ফারুকি এলাকার হান্নান ও হেজন আলী। 

হেজন আলী বলেন, ‘মশারি ও ঠেলা জালে চিংড়ি রেণু ধরা পড়ে। একজন জেলে প্রতিদিন ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার পোনা ধরতে পারেন। আড়তদারের কাছে ১০০ পোনা ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মহাজনেরা অগ্রিম ঋণ দেওয়ায় পোনা ধরায় উৎসাহী হয়ে উঠছেন শিকারীরা।’

ব্যবসায়ী ছাবের আহমেদ বলেন, ‘মেঘনা ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর গলদা চিংড়ির রেণু অল্প সময়ে বড় হয়। এ জন্য খুলনা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চিংড়ি ঘেরের মালিকদের কাছে মেঘনার পোনার কদর বেশি। জেলেদের কাছ থেকে রেণু কিনে ব্যবসায়ীরা ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। এ ব্যবসায় তাদের লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।’

একটি চিংড়ি রেণু ধরতে গিয়ে অন্যান্য মাছের সহস্রাধিক রেণু ও ডিম নষ্ট করছে উল্লেখ করে ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশের ইকোফিস-২ এর সহকারী গবেষক মোনাইম হোসাইন বলেন, ‘অপরিকল্পিত আহরণের কারণে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো মারুফ মিনার বলেন, ‘নদী থেকে গলদা-বাগদা রেণু ধরা অবৈধ। জানুয়ারি থেকে রেণু ধরা বন্ধে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বেহুন্দি, খুঁটি, ডগা জাল আটক করা হচ্ছে।  চিংড়ির রেণু আহরণ করতে গিয়ে ২১০টি প্রজাতির অন্য রেণু নষ্ট হচ্ছে। যারা অবৈধ ভাবে রেণু আহরণ করছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। একশ্রেণির অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীর কারণে নদী থেকে পোনা ধরা বন্ধ করা যাচ্ছে না। পোনা আহরণ বন্ধে প্রয়োজনে অভিযান জোরদার করা হবে।’

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,