For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

লক্ষাধিক মানুষের ভরসা একটি বাঁশের সেতু

Published : Monday, 14 March, 2022 at 12:30 PM Count : 101

বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষ। নাটোরেগুরুদাপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের সাবগাড়ি আদর্শ বাজার সংলগ্ন আত্রাই নদীর ওপর এই বাঁশের সেতুটির অবস্থান।

এলাকাবাসী দশকের পর দশক ভোগান্তি সয়ে পারাপার হলেও একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি উপেক্ষিত থেকে গেছে আজও।

স্থানীয়রা জানান, আত্রাই নদীর পূর্ব পাড়ে ফকির পাড়া, বিলহরিবাড়ি, হরদোমা, সাবগাড়ী, কৃষ্ণনগরসহ ১০ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষর বসবাস। রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও বিলহরিবাড়ি কবরস্থান। পশ্চিম পাড়ে রয়েছে বিয়াঘাট, সাবগাড়ি, বিলদহর ও জ্ঞানদা নগর, দুর্গাপুর গ্রাম। এই পাড়েই রয়েছে একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও সাবগাড়ী হাট।

আত্রাই নদীর দুই পাড়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ওই বাঁশের সেতুর ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নির্ভরশীল। ওই নদী পার হয়ে দুই পাড়ের মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। এছাড়া পূর্ব পাড়ের মানুষের জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী মাধ্যমও এটি। তাছাড়া ধানসহ রবিশষ্য আবাদ শুরু হওয়ায় পারাপারে চাপ তো রয়েছেই। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীটির এপার ওপার জুড়ে বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝামাঝি পর্যায়ে খানিক জায়গা রেখে সেখানে নৌকা রাখা হয়েছে। ফসলাদী নিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন। স্থানীয় খোকন মাঝি নামের এক ব্যাক্তি খেয়া ঘাটটি ইজারা নিয়েছেন। সেতুতে পার হতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে সদস্য অনুপাতে অধা মণ থেকে ১ মণ হারে ধান নেওয়া হয়। এছাড়া দূরের এলাকা থেকে আসা মানুষের ক্ষেত্রে বাইসাইকেল পাঁচ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা ও মানুষ পারাপারের ক্ষেত্রে দুই টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। 

ইজারাদার খোকন মাঝি (৪২) বলেন, ভড়া বর্ষায় নৌকায় মানুষ পারাপার করা হয়েছে। এখন পানি কমে যাওয়ায় গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫০ মিটারের বাঁশের সেতুটি নির্মাণ করেছি। 

দূর্গাপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ওমর আলী (৬৪) বলেন, নদীর ওপর সেতু না থাকায় পূর্ব পাড়ের বাসিন্দারা বেশি কষ্টে আছেন। কারণ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কোন বিদ্যালয় নেই ওই পাড়ে। প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে আসে। তাছাড়া এখানকার মানুষের নিত্য কেনা-কাটা, জমির ফসল উৎপাদন-বিক্রি ও দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে উঠেছে ওই বাঁশের সেতু। একটি ব্রিজ নির্মাণ এই এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে পারে।
 
সাবগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী, রাজু, সেবক, মরিয়ম, আঁখি ও দিপালী জানায়, বাঁশের সেতু পার হতে ভয় লাগে। তবুও বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য নদী পাড় হতেই হয়।

স্থানীয় কৃষক রওশন আলী বলেন, নদীর পূর্ব পাশে বিস্তীর্ণ চলনবিল। একটি সেতুর অভাবে কৃষকদের পণ্য পরিবহনেও বাড়ে অসহনীয় ভোগান্তি। বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে ধান বহনকারী গরু ও মহিষের গাড়ি পারাপারে দুর্ভোগ দেখা দেয়। তাছাড়া প্রসূতি ও অসুস্থরা সময়মতো চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  

বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সুজা বলেন, সারাদেশে যেখানে রাস্তাঘাট, বিদুৎ আর প্রযুক্তিতে অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে সেখানে এই এলাকাটি এখনো অধিকার বঞ্চিত রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সাংসদের মাধ্যমে সেতুমন্ত্রীকে অবগত করা হবে।

স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গ্রামের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়টি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

খুব দ্রুতই এলাকার মানুষ আশার আলো দেখবেন বলে তার ধারণা।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,