For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ঝিনাইদহে দিনে ২২ বিবাহ, বিচ্ছেদ হয় ৯টি

Published : Thursday, 3 March, 2022 at 11:42 AM Count : 190

ঝিনাইদহে তিন বছরে প্রায় ১০ হাজারের মত বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহে প্রতি মাসে গড়ে বিবাহ হয় ৬৬০.৬৪টি আর বিবাহবিচ্ছেদ হয় ২৭১.৬১টি। গড়ে প্রতিদিন বিবাহ হয় ২২টি আর বিবাহবিচ্ছেদ হয় ৯টি।

গত তিন বছরে ছেলে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ৮৯৪টি আর মেয়ে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ৪৩২৭টি। তথ্যানুযায়ী তালাকের ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। জেলায় তালাক ও বিচ্ছেদ এমন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে পরষ্পরকে তালাক দিচ্ছেন। 
এমন বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে, দুই যুগের সংসার ঠুনকো অজুহাতে নিমিষেই ভেঙে যাচ্ছে। তবে পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিবাহবিচ্ছেদে পুরুষের চেয়ে নারীরা এগিয়ে রয়েছে। এদিকে বিয়ের ঘটনা বৃদ্ধি না পেলেও তালাকের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
 
ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে জেলায় বিবাহ হয় ৯ হাজার ৪৬টি। ছেলে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ৩৮৪টি, মেয়ে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ১৮৫৪টি। হিসাব অনুযায়ী ৯ হাজার ৪৬টি বিবাহের বিপরীতে পর তালাক হয় ৩৯৮৪টি জনের। অথ্যাৎ ২০২১ সালে তালাকের হার ৪৪%। ২০২০ সালে জেলায় বিবাহ হয় ৬ হাজার ৮৯৫টি। ছেলে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ২৩২টি, মেয়ে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ১১৪৩টি। হিসাব অনুযায়ী ৬ হাজার ৮৯৫টি বিবাহের বিপরীতে তালাক হয় ২৭৩০টি। অর্থাৎ ২০২০ সালে তালাকের হার ৩৯.৬০%। ২০১৯ সালে জেলায় বিবাহ হয় ৭ হাজার ৮৪২টি। ছেলে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ২৭৮টি, মেয়ে কর্তৃক তালাকের সংখ্যা ছিল ১৩৩০টি। হিসাব অনুযায়ী ৭ হাজার ৮৪২টি বিবাহের বিপরীতে তালাক হয় ৩০৬৪টি। অর্থাৎ ২০১৯ সালে তালাকের হার ৩৯%। ২০১৯ সালে থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ২৩ হাজার ৭৮৩টি বিবাহের বিপরীতে তালাক হয় ৯ হাজার ৭৭৮টি। অর্থাৎ তিন বছরে তালাকের হার ৪১%। 

তালাক নোটিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিবাহবিচ্ছেদে ঘুরে ফিরে একই কারণ দেখিয়েছেন আবেদনকারীরা। প্রাপ্ত আবেদনপত্রে দেখা যায়, এগুলো একটি ছক আকারে তৈরি। যা আইনজীবীদের কাছে আগে থেকেই তৈরি থাকে। আবেদনগুলোতে তালাকের কারণ হিসেবে বেশিরভাগই ছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া। স্ত্রীর করা আবেদনে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভরণ-পোষণ না দেওয়া, স্বামীর সন্দেহবাতিক মনোভাব, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবাহবন্ধনে আবব্ধকরণ, কাবিন না হওয়া, মাদকাসক্তি, পুরুষত্বহীনতা, স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, যৌতুক, মানসিক পীড়ন, পরকীয়া, আর্থিক সমস্যা, ও ব্যক্তিত্বের সংঘাত। অন্যদিকে স্বামীরাও তাদের নোটিশে উল্লেখ করেছেন, পরকীয়া, আর্থিক সক্ষমতা কমে যাওয়া, বেপরোয়া জীবনযাপন, বদমেজাজ, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, সন্তান না হওয়া, অবাধ্য হওয়া, টিকটকসহ সামাজিক মাধ্যমে অবাধ বিচরণ করা, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী না চলাসহ বিভিন্ন কারণের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। পৌরসভার কর্মকর্তারা বলছেন, তালাকের যেসব আবেদন জমা পড়ে, তার সবগুলো একই রকম। মাঝে-মধ্যে দু-একটি কারণ এদিক-ওদিক হয়।

নিকাহ রেজিস্ট্রাররা জানান, নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলায় হাজতবাসের ভয়ে পুরুষরা আগে তালাক দেয় না। যেভাবেই হোক সংসার করে। কিন্তু নারীদের বিরুদ্ধে কোনো আইন না থাকায় প্রায় তারা তালাক দিয়ে দীর্ঘদিনের সংসার তছনছ করে ছাড়ছে।
-জেইউ/এনএন

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,