For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

দশমিনা-ঢাকা নৌপথের লঞ্চগুলোতে নেই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা

Published : Tuesday, 4 January, 2022 at 4:06 PM Count : 460

নজরকাড়া আলোকসজ্জা এবং বাহারী ডেকোরেশন করে যাত্রী আকর্ষণ করা হলেও দুর্ঘটনারোধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেই ঢাকা-দশমিনা-পায়রা বন্দর (কলাপাড়া) ও ঢাকা-দশমিনা-রাঙ্গাবালী নৌরুটের লঞ্চগুলোতে। 

জীবন রক্ষাকারী পর্যাপ্ত সরঞ্জাম কিংবা আগুন নেভানোর প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নেই এসব জলযানে। 

যাত্রীবাহী এসব লঞ্চে ভিআইপি কেবিন, প্রথম শ্রেণির কেবিন, এয়ারকন্ডিশনার, বাহারী আলোকসজ্জা, টেলিভিশন ইত্যাদি থাকলেও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, লাইফ জ্যাকেট ও লাইফবয়াসহ অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদির যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। লাইফ জ্যাকেট নেই বললেই চলে। 

কেবিন জোনগুলোতে দু’এক জায়গায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও ডেক যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। ডেকে আগুন লাগলে ইঞ্জিন কক্ষ বা নির্দিষ্ট কক্ষে গিয়ে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আনতে হবে। ততক্ষণে আগুন অনিয়ন্ত্রিত হতে পারে। 
তাছাড়া এসব লঞ্চে আগুন নেভানোর জন্য মাত্র একটি করে হস্তচালিত পাম্প রয়েছে। এসব লঞ্চগুলোতে আগুন নেভানোর জন্য প্রশিক্ষিত কর্মীর সংখ্যা যথেষ্ট নগন্য। সিঙ্গেল ডাবল মিলিয়ে ৪/৫টি কেবিনের যাত্রীদের জন্য রয়েছে একটি করে লাইফবয়া। ডেকের অবস্থাও একই। বিশেষ দিনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা বাড়লেও বাড়ানো হয় না লাইফবয়ার সংখ্যা। 

এ রুটের কয়েকটি লঞ্চে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে যেসব সামগ্রী তাৎক্ষণিক দরকার তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত থাকলেও রাখা হয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে। এছাড়াও লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষের পাশেই বড় গ্যাস সিলিন্ডার বসিয়ে রান্না করা, চা সিগারেটের দোকান পরিচালিত হওয়া, ট্যাংকি ভর্তি দাহ্য পদার্থ পেট্রোল অকটেনসহ মোটরসাইকেল বহন, নিচতলার ডেক যাত্রীদের ইঞ্জিন কক্ষের পাশ দিয়েই পেছনের টয়লেটে অবাধে আসা যাওয়ার কারণে অগ্নিকাণ্ডের মত মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা তো নিত্য বিষয়।

এসব নৌরুটে প্রতিদিন গড়ে ছয়/সাত হাজার যাত্রী চলাচল করে। রাত্রীকালীন নৌপথে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আগে প্রতিটি লঞ্চে ১০/১১ জন করে সশস্ত্র আনসার সদস্য থাকলেও বর্তমানে এ রুটের কোন লঞ্চেই তা নেই। মালিকরা কৌশলে ব্যয় কমাতে আনসার সদস্যের পরিবর্তে প্রতিটি লঞ্চে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিয়েছেন। এ কারণে রাত্রিকালীন নৌপথে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ব্যবসায়ীরা ও টাকা-পয়সা স্বর্ণালংকার বহনকারী যাত্রীরা।

আমিনুল ইসলাম নামের এক যাত্রী অবজারভারকে বলেন, 'ঝালকাঠীর সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমাদের সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট শংকা তৈরি হয়েছে।'

এ রুটের নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রী নুরুল হক বলেন, 'অভিযান-১০ লঞ্চের দুর্ঘটনা আমাদের বিলাসবহুল কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চের কথা মনে করিয়ে দেয়।'

এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৩ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলাম অবজারভারকে বলেন, 'আমাদের লঞ্চে প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে।'

লঞ্চের নিচতলার ডেকে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এগুলো যাত্রীরা জোর করে উঠিয়েছে।'

এম.ভি চাঁদনী-১ লঞ্চের সুপারভাইজার রফিকুল ইসলাম রিয়াজ বলেন, 'আমরা সরকারি নিয়মকানুন মোতাবেক সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি।'

লঞ্চের ইঞ্জিন রুম সংলগ্ন পেছনে কেন্টিনের পাশেই রান্নার জন্য রাখা গ্যাস সিলিন্ডার ও ডেকে থাকা মোটরসাইকেলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'লঞ্চে আমাদের নিজস্ব একটা ও যাত্রীদের দুটি মোটরসাইকেল রয়েছে।'

নৌ-পুলিশ দশমিনা ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আনিসুর রহমান অবজারভারকে বলেন, 'আমরা নিয়মিত লঞ্চে টহলসহ সর্বোচ্চ সর্তকতার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অব্যাহত ভাবে ব্রিফিং করে আসছি।'

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশন দশমিনার ভারপ্রাপ্ত ষ্টেশন অফিসার লিডার মো. আবুল বশার বলেন, 'বিভিন্ন ঘাট থেকে ছাড়া লঞ্চগুলোর প্রতি আমাদের সতর্কতামূলক দৃষ্টি রাখার জন্য সদর দপ্তরের নির্দেশ রয়েছে।'

বিআইডব্লিউটিএ পটুয়াখালী পোর্ট অফিসার মো. মহিউদ্দিন অবজারভারকে বলেন, 'দশমিনার লঞ্চঘাট আমার এখতিয়ারভুক্ত হলেও আমরা তো ওখানে থাকতে পারি না। আমরা সপ্তাহে দু’একবার যেতে পারি। স্থানীয় প্রশাসন ওটা দেখতে পারবে। তাছাড়া ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চগুলো প্রতিনিয়ত পরিদর্শন হচ্ছে।'

দশমিনার ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবদুল কাইয়ুম অবজারভারকে বলেন, 'অতি শীঘ্রই লঞ্চগুলো পরিদর্শন করে ত্রুটি পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। '

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,