For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ছোট ভাই-বোনদের ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন দেখে আশিক

Published : Thursday, 17 October, 2019 at 12:21 PM Count : 448

যে বয়সে বই, খাতা নিয়ে স্কুলে যাবার কথা, সেই বয়সে ছোট ভাই-বোনদের ভবিষ্যত ভেবে সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নিয়েছে কিশোর আশিক। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চা বিক্রি করে লেখাপড়া করাচ্ছেন ছোট ভাই-বোনদের। পিতা-মাতাহীন কিশোর আশিক আজও কোন সরকারি সহায়তা পায়নি। মানবেতর জীবনযাপন করছে গোটা পরিবারের লোকজন। 

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কষবা গ্রামের রাশিদুল ইসলামের ছেলে আশিক। বয়স ১২। যে বয়সে তার বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার কথা। বিকেলে মেতে ওঠার কথা সহপাঠিদের সঙ্গে খেলাধুলায়। সেই বয়সে আশিকের সকাল আর সন্ধ্যা কাটে চা বিক্রির মধ্য দিয়ে। ছোট ভাই মুস্তাকিম, রিয়াজ ও বোন কুলছুমের মুখে ভাত তুলে দেয়ার জন্য দাদার চায়ের দোকানটিকে এখন আয়ের একমাত্র উৎস হিসেবে নিয়েছে সে। নিজের ভবিষ্যত না ভেবে ছোট ভাই-বোনদের ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন দেখে আশিক।

বছর সাতেক আগে পরকীয়ায় জড়িয়ে স্ত্রী ও চার শিশু সন্তান রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে রাশিদুল। তখন থেকেই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন প্রথম স্ত্রী সানোয়ারা। প্রতিবেশীদের চাপে রাশিদুল প্রথম স্ত্রী ও চার সন্তানের দেখাশোনা করলেও তিন বছর আগে স্ত্রী সানোয়ারা মারা গেলে সন্তানের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেয় সে। চার শিশু সন্তানের মুখে ভাত তুলে দেয়ার জন্য দাদা লালন তার পুরানো চায়ের দোকানটি চালু করেন। বয়োভারে বৃদ্ধ দাদার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সব স্বপ্ন শেষ করে সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নেয় আশিক।

আশিকের দাদা লালন বলেন, 'ছোট বেলা থেকেই বেশ মেধাবী ছিল কিশোর আশিক। গ্রামের পাঠশালায় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে সে। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে তার। পিতার দ্বিতীয় বিয়ে ও মায়ের মৃত্যু সব কিছু নিঃশেষ করে দিয়েছে আশিকের স্বপ্ন। পিতা-মাতা না থাকায় একদিকে যেমন খাবারের কষ্ট অন্যদিকে বাসস্থানের সমস্যাটাও প্রকট। একটি ঝুপড়ি ঘরে স্যাঁত স্যাঁতে পরিবেশে তাদের বসবাস।'
ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখের আলী বলেন, 'পাষণ্ড পিতার জন্য চারটি সন্তানের আজ দুর্দশা। একই গ্রামে বসবাস অথচ দ্বিতীয় স্ত্রীর প্ররোচণায় সন্তানদের কোন খোঁজ খবর রাখেনা রাশিদুল। কোন কোন দিন সন্তানেরা না খেয়ে থাকে। প্রতিবেশিরা এসব এতিমদের খবর দিলেও বাবা তাদের খোঁজ নেন না।'

মানবিক দৃষ্টিতে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার তৌফিকুর রহমান বলেন, 'বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে যা কিছু সম্ভব তিনি তা করবেন। তারা আবেদন করলে অনুদানের ব্যবস্থা করবেন। যেহেতু তাদের চায়ের দোকান আছে যদি ঋণ নিতে চায় তাহলে হয়তো তা দেয়া সম্ভব হবে।'

উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান বলেন, 'তিনি বিষয়টি শুনেছেন। ইতোমধ্যে আশিকের দোকানটি সুন্দর করে ব্যবসার উপযোগী এবং একটি বাড়ি তৈরি করে দেবেন।'

এছাড়াও, ওই শিশুদের জন্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন তিনি।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,