শ্রেণিকক্ষ সংকট, মাদুর বিছিয়ে চলছে পাঠদান
Published : Monday, 30 December, 2019 at 12:19 PM Count : 442
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে চলছে পাঠদান। এছাড়াও নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়টির পাঠদানের পরিবেশ। বিদ্যালয়টি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, বৈদ্যুতিক ফ্যান না থাকা, শ্রেণিকক্ষের সংকট, পর্যাপ্ত ব্রেঞ্চের অভাবসহ নানা সমস্যার ভারে রুগ্ন হয়ে পড়েছে। পাঠদান চালু রাখতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলীরা বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের সঞ্জয়পুর গ্রামে অবস্থিত সঞ্জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৬৯ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষা অনুরাগী এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজস্ব তহবিল থেকে এক একর জমি ক্রয় করে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। ১৯৭৩ সালে এই বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। দীর্ঘ সময় মাটি আর বেড়ার ঘরে পাঠদান চললেও ২০০০ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি অনেক পুরাতন হওয়ায় ছাদের সিমেন্ট বালু খুলে খুলে পড়ছে। এই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন প্রায় ১১৩ জন শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করে। প্রতি কক্ষে চারটি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দু’টি করে। গরমের সময় শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে গাদাগাদি করে পাঠগ্রহণ করে।
অভিভাবক আবু তালেবসহ অনেকেই বলেন, এই প্রত্যন্ত অবহেলিত এলাকায় আমাদের সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের একমাত্র স্থান এই বিদ্যালয়টি। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের এই আঁতুর ঘরটি অনেক সমস্যায় জর্জড়িত। পুরাতন ভবনের কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পর আতঙ্কে থাকি। শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে বারান্দায় মাদুরে বসে শিক্ষা গ্রহণ করে। উপযুক্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও নতুন ভবন না পাওয়ায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে রয়েছে বিদ্যালয়টি।
প্রধান শিক্ষক শাহাদত হোসেন বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই। এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে ভর্তি করাতে চায় না। অতি দ্রুত পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক মানের একটি ভবন, ব্রেঞ্চসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সরবরাহ করা খুবই জরুরী। তা না হলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ হারিয়ে যাবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার শামসুজ্জামান বলেন, ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠমোগত কি কি সমস্যা আছে তা আমার জানা নেই। তবে আমি অতি দ্রুত ওই বিদ্যালয়ের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত ভাবে জানাবো।
-এমএ