সারাদেশে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে রোগ-বালাইও। রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালেই রোগীদের সংখ্যাও বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর, টনসিল—শীতের এসব রোগবালাইয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। তবে বৃদ্ধদের ক্ষেত্রেও এই ঝুঁকি কম নয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৭৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ৫১৪ জন ভর্তি হয়েছেন।
শীত শুরুর পর ১ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ লাখ ৯১২ জন ভর্তি হয়েছেন। আর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ হাজার ৭৮৮ জন হাসপাতালে এসেছেন।
তথ্য মতে, চলতি বছর শীতকালীন রোগে ৪৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে এআরআইতে ১৬, ডায়রিয়ায় ৪ এবং অন্যান্য রোগে ২৯ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগেই মারা গেছেন ২২ জন। রংপুর বিভাগে ১৩ জন এবং বরিশালে ৫ জন মারা গেছেন।
ঢাকা মোডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রাজেশ মজুমদার বলছেন, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন নতুন কিছু রোগব্যধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর মধ্যে বেশি রোগব্যাধি হয় শীতকালে। এবারও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, বাত-ব্যাথা, শ্বাসকষ্ঠ, নিউমেনিয়া ও ব্রংকাইটিস, টনসিলের ব্যথা ও প্রদাহসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শীতকালীন রোগব্যধিতে ৬ মাস থেকে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়। তবে সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি।
করণীয় জানিয়ে তিনি বলেন, শীতাকালীন রোগব্যধিতে শিশুদের রক্ষা করতে হলে ফুলহাতা গরম কাপড় পরাতে হবে। মাথায় টুপি পরবে। এ সময় শিশুদের গোসল দেওয়া জরুরি নয়। যেসব শিশু বিছানায় প্রস্রাব করে তাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এছাড়া হাত ধুয়ে ও ঠাণ্ডা খাবার গরম করে খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এদিকে আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা অ্যাকু ওয়েদারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- দিন দুয়েকের মধ্যেই তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। তবে শীতের তীব্রতা কমতে না কমতেই নামতে পারে বৃষ্টি। সংস্থাটি বলছে, বুধবার রাতে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
অন্যদিকে আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য এখনো কম থাকায় সারাদেশেই ঠাণ্ডা অনুভূতি বেশি রয়েছে আগের মতোই। এটা দু’ এক দিনের মধ্যে কমে যেতে পারে।
এছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতের কারণে ব্যহত হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয় ও ছিন্নমূল মানুষ।