মেহেরপুরে নির্মাণাধীন নার্সিং কলেজ
কাজের মেয়াদের সাথে বেড়েছে ব্যয়
Published : Wednesday, 22 May, 2024 at 2:46 PM Count : 264
এখনো কাজ বাকি ৪০ ভাগ যদিও চতুর্থবার বাড়ানো কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত জানুয়ারিতে। মানুষকে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য ২০১৯ সালে মেহেরপুরে নার্সিং কলেজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত পাঁচ বছরে প্রকল্পটির মেয়াদ বেড়েছে চার বার আর তার সাথে বেড়েছে নির্মাণ ব্যয়ও। প্রকল্প শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। পরে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চতুর্থবারের মতো বাড়ানো কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এখনো ৪০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকার পিয়াস কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল মালেক বলেন, এই নার্সিং কলেজটি নির্মাণের শুরুতে দেশে করোনা দেখা দেয়। ওই অবস্থায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে হয়। পরে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যায় অনেকাংশে। বড় লোকসানের আশঙ্কায় কাজ ধীরগতিতে করা হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও চলতি বছরে শেষ করা হবে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অভিজ্ঞ শিক্ষকের মাধ্যমে যোগ্যতা সম্পন্ন নার্স তৈরি করতে একটি নার্সিং কলেজ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল। সরকার প্রস্তাবে সাড়া দেয়। ২০১৯ সালে ১৮০ আসন বিশিষ্ট নার্সিং কলেজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। চতুর্থবারের মতো কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এখনো অনেক কাজ বাকি। প্রকল্পটির ব্যয়ও বেড়েছে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, পরে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ব্যয় আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারতলা কলেজ ভবনের ভেতরের প্লাস্টার করা হয়নি। জানালার ফ্রেম বসানো হয়নি। ওয়াশরুমের কাজ এখনো হয়নি। মাত্র পাঁচ জন শ্রমিক কাজ করছেন ঢিমেতালে। শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবনের দশা আরও করুণ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে দেয়ালগুলো স্যাঁৎস্যাঁতে হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের আলাদা আলাদা কক্ষ করা হয়নি। বাথরুমের কাজও করা হয়নি।
নির্মাণ শ্রমিকরা বলেন, ঠিকাদারের কথামত কাজ করতে হয়। তিনি যেভাবে নির্দেশ দেন ঠিক ওইভাবে কাজ করতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা থেকে কয়েকজন লোক এসে কাজ দেখে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বরত আবদুল মালেক বলেন, পিলার ও চারতলা ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হলে বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানির লাইন, গ্রিলের কাজ, মেঝেতে টাইলসসহ অন্যান্য কাজ করা হবে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাসিবুস সাত্তার অভিযোগ করে বলেন, একটি কলেজের নির্মাণ কাজে যদি পাঁচ বছর লেগে যায়, তাহলে কিভাবে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব? এতদিন এই এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে কাজে যোগ দিতে পারতো। জেনারেল হাসপাতাল পেত আরও দক্ষ নার্স।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল কাদের বলেন, তারা তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ঠিকাদার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সময় বাড়িয়ে নেন। তারা আবারও ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার তাগাদা দেবেন।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে নার্সিং কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সেই লক্ষ্য পূরণ করা যাচ্ছে না। দ্রুত কলেজের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।
-এমএ