রেলের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ
Published : Tuesday, 26 September, 2023 at 3:43 PM Count : 950
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার রেল স্টেশনসহ আশপাশের জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখল হয়ে যাওয়া সে সমস্ত জমিতে পুলিশের সামনেই উঠছে পাকা ভবন। রেল লাইনের আশপাশে দোকান গড়ে উঠায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ট্রেন চলাচল।
গোয়ালন্দ মহকুমা একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং এই জনপদের রেলপথের ঐতিহ্য সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। ১৮৭১ সালের ০১ জানুয়ারি গোয়ালন্দ থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত প্রায় ৭৫ কিলোমিটার রেল লাইনের উদ্বোধন করা হয়। এখান থেকে সে সময় একটি ট্রেন কলকাতা যেত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পাশেই রেলের জায়গায় আরসিসি পিলার করে দোকান তুলেছেন বেশ কিছু লোক। এর আশপাশে আরও দোকান, বোর্ডিংসহ খাবারের দোকান। এছাড়া রেল স্টেশনের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন দোকান, হোটেলসহ বাসা বাড়ি। এই স্টেশনে কোনো স্টেশন মাষ্টার না থাকায় এবং রেলওেয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা না থাকায় ইচ্ছে মত সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে কিছু চিহ্নিত ভূমিদস্যু।
এ সমস্ত জমিতে পাকা ভবন করা নিষেধ থাকলেও এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাতারাতি ওইসব জায়গায় অবৈধ দুই/তিনতলা ভবন গড়ে তুলেছেন। অপরিকল্পিত এবং অননুমোদিত এসব স্থাপনা নির্মাণের ফলে গোয়ালন্দ রেল স্টেশনসহ এলাকার প্রধান প্রধান সংযোগ সড়কগুলো ফুটপাতবিহীন হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও ট্রেন যাত্রীদের। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠা-নামা এবং পথ চলাচল করছেন সাধারণ মানুষ।
যারা এসব দোকানসহ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রেলওয়ের এস্টেট বিভাগ থেকে তাদের স্থাপনা তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি তারা।
প্রভাবশালী মহল একের পর এক সরকারি জমি দখল করে হোটেল, পাকা ঘর-বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। এভাবে দখল হলেও প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন এলাকাবাসী। এছাড়া সম্প্রতি একজন রেলের জায়গায় তিনতলা ভবন নির্মাণ করলেও রেলওয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ এই এলাকার সাধারণ জনগণ।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড (রেলওয়ে স্টেশন এলাকা) কমিশনার কার্তিক ঘোষ বলেন, 'রেলওয়ের জায়গা দখল এটা দুঃখজনক ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে রেলওয়ে বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে সহযোগিতা করবো।'
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন ডেইলি অবজারভারকে বলেন, 'এটা রেলওয়ে বিভাগের কাজ। তবে উপজেলা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।'
গোয়ালন্দ ঘাট রেলওয়ে থানার ওসি সম্ভু নাথ বলেন, 'এগুলো দেখার দায়িত্ব আমাদের না। এগুলোর জন্য রেলওয়ে বিভাগের কানুন গুহ আছে তারাই এই বিষয়ে দেখভাল করেন।'
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক পাকশী (অঞ্চল) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ ডেইলি অবজারভারকে বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে তদন্ত করে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
-এমএ