For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ঘাঘট নদীর ৮ স্থানে নৌকা ও সাঁকো, লাখো মানুষের ভোগান্তি

Published : Friday, 23 February, 2024 at 3:46 PM Count : 211



গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বুকচিরে বয়ে গেছে ঘাঘট নদী। এই নদীর ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ৮ টি স্থান দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা ও বাঁশের সাঁকো। দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছরেও নির্মাণ হয়নি ব্রিজ। ফলে নড়বড়ে নৌকা আর সাঁকোতে চলাচলে জীবনের ঝুঁকিসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। 

ওইসব স্থানগুলো হচ্ছে- উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের মন্দুয়ারের চৌকিদারের খেয়াঘাট, টুরিচর ঘাট, দামোদরপুর ইউনিয়নের সিটজামুডাঙ্গার কর্নের খেয়াঘাট, চকশালাইপুর-ভাঙ্গামোড়ের মাঠেরঘাট,  চান্দের বাজার এলাকার ইব্রা মন্ডলের ঘাট, নলডাঙ্গার শ্রীরামপুরের কাটানদীর মুখঘাট ও রসুলপুর ইউনিয়নের মহিশবান্দী দ্বীপচর। ঘাঘট নদীর এসব স্থান দিয়ে দৈনন্দিন লক্ষাধিক মানুষ ডিঙ্গি নৌকা ও কাঁঠ-বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। 
সম্প্রতি স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, যখন সংসদ নির্বাচন কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয়, তখন নদীপারে বৃদ্ধি পায় নেতা-কর্মীদের আনাগোনা। নির্বাচনী প্রার্থীরা অবিরাম ছুটে চলেন ঘাঘট তীরের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। এসময় সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন তারা। তবে কথা রাখেনি কেউ। নির্বাচিত হওয়ার পর আর দেখা মেলেনা তাদের। এভাবে যুগযুগ কেটে গেছে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে। ফলে জীবনের ঝুঁকিতে নৌকা ও সাঁকো দিয়েই চলাচলা করছে শতাধিক গ্রামের মানুষ। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদেরও একমাত্র ভরসা নৌকা ও সাঁকো। বর্তমানে ভাঙাচুরা এসব নৌকা-সাঁকো দিয়ে চলতে গিয়ে হরহামেশে ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে করে প্রাণহানির আশঙ্কা করছে ভুক্তভোগিরা। এসব স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি জানান ভুক্তভোগিরা।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, চলাচলের জনগুরুত্বপূর্ণ ঘাঘট নদীর ৮টি স্থানে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় এপার-ওপার যেতে হয়। এসময় নৌকাডুবির ঘটনাসহ মানুষ নানা দুর্ভোগের শিকার হয়। এরপর শুকনো মৌসুমে স্থানীয়দের আর্থিক ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় কাঠ-বাঁশের সাঁকো। এটিও প্রত্যক বছরে পুণসংস্কার করতে হয়। সেখানে মেলেনা সরকারি বরাদ্দ। মাঝে মধ্যে কোন জনপ্রতিনিধিরা কিছু টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। সেটি চাহিদার চেয়ে অপ্রতুল। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নড়বড়ে ওইসব কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশা-শ্রেণির লাখ লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে থাকেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। 

ওইসব ঘাট দিয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভের আশায় আলোকিত হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা পথচারীরা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে থাকেন। আর পরিবার পরিজনরা থাকেন উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠার মধ্যে। বর্ষা মৌসুম এলেই নদীর কানায় কানায় পানি ভরে গেলে বেড়ে যায় আরও দুর্গতি। এছাড়াও হঠাৎ কোন রোগী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার জীবন নির্ভর করে সময়ের উপর। একটু দেরি হলেই রোগীর জীবন অসহ্য যন্ত্রণাসহ ওখানেই মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয়  ঘাঘট নদীর ঘাটে।  

ঘাঘট তীরের বাসিন্দা এরশাদ আলী ও ইব্রাহিম মিয়াসহ আরও একাধিক ব্যক্তি বলেন,  বর্তমান সময়ে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটলেও আজও উন্নয়নে পরিবর্তন হয়নি ঘাঘটের ওইসব ঘাটে। স্বাধীনের ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন সরকারের আমলেই নজরে আসেনি ব্রিজ নির্মাণে। এতে করে সময় নষ্টসহ ঝূঁকিতে থাকতে হয় জীবনের ভয়ে। 

সাদুল্লাপুরের ঘাঘটের ৮টি স্থানে ব্রিজ নির্মাণ হলে লেখাপড়া, ব্যবসা বাণিজ্যসহ কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রসার ঘটবে। সেই সাথে দীর্ঘদিনের দাবী বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। তাই ব্রিজ হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষক। 

উপজেলা প্রকৌশলী মো. মেনাজ বলেন, ওইসব ঘাটের মধ্যে চান্দের বাজার ইব্রা মন্ডলের ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।  

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হাবীব জানান, ঘাঘট নদীর টুনিরচর এলাকায় ব্রিজ নির্মাণসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে এ উপজেলায় বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।  

এ বিষয়ে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

টিএইচজে/এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,