For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ইট ভাটার দাপটে উজার হচ্ছে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী

Published : Saturday, 27 January, 2024 at 11:28 AM Count : 346

ভোলাচরফ্যাশনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ছাড়াই কৃষিজমি ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা। উপকূলজুড়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিযন্ত্রণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সৃজন ম্যানগ্রোভ বন উজাড় হচ্ছে সেই ইট ভাটার জ্বালানির জোগান দিতে। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। উজাড় হচ্ছে সবুজ বেষ্টনী।

প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় আইন অমান্য করে ম্যানগ্রোভ বাগান এলাকা, ফসলি জমি, জনবসতিপূর্ণ এলাকাসহ চরফ্যাশনের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ৩৪টি ইট ভাটা। এর মধ্যে ৩২টির অনুমোদনহীন। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাডপত্র এবং ইট পোড়ানোর লাইসেন্স। ১২টি ভাটা জিগজ্যাগ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে
দাবি করলেও বাস্তবে প্রমাণ মেলেনি। বাকিগুলোতে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ফুট উচ্চতার ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ নিয়ম হলো ১২০ ফুট ওপরে চিমনি ব্যবহার। এছাড়া ১৯৯২ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও ২০০১ সালের (সংশোধিত) ইট পোড়ানো নিযন্ত্রণ আইন অনুযায়ী আবাদি জমি ও ঘনবসতি এলাকায় ইট ভাটা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। 

উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ইট ভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মৌসুমে এক চিমনির একটি ভাটায় ২৭ থেকে ২৮ লাখ এবং দুই চিমনির ভাটায় ৫০ লাখ পর্যন্ত ইট তৈরি হয়। এক লাখ ইট তৈরিতে কাঠ লাগে দুই হাজার মণ। সেই হিসাবে ৩৪ ভাটায় প্রতি মৌসুমে ন্যূনতম কয়েক কোটি কোটি মণ কাঠ পুড়ছে। জলবাযুর পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ভোলাকে রক্ষায় গড়ে তোলা উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বাগান এসব কাঠের প্রধান উৎস বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভাটা মালিকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ম্যানগ্রোভ বাগান, সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভাটা স্থাপন করেছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও বিনষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনস্বাস্থ্য। 

বিধিবর্হিভূত ভাবে পরিচালিত ভাটা মালিকরা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছেন তারা। নানা কারণে ছাড়পত্র মেলেনি। তাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ইট ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই ইট উৎপাদন ও বিপণন কাজ চলছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ভোলাকে রক্ষায় গড়ে তোলা উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বাগান এসব কাঠের প্রধান উৎস। এতে একদিকে ম্যানগ্রোভ বাগান বিলীন হচ্ছে অন্যদিকে গড়ে উঠেছে এক শ্রেণির পেশাদার কাঠ চোরচক্র।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া বলেন, জনবসতি এলাকায় ইট পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কেউ এ আইন অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওযা হবে।

চরফ্যাসন উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সালাম হোসেন বলেন, ভাটায় কাঠ পোড়ানোর কোনো বৈধতা নেই। যদি কোনো ভাটা মালিক ম্যানগ্রোভ বাগানের কাঠ কেটে পুড়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওযা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ সালেক মুহীত বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,