For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

আমেরিকার ভিসানীতির প্রভাব পোশাক রপ্তানিতে পড়বে না: বিজিএমইএ

Published : Tuesday, 26 September, 2023 at 4:16 PM Count : 281



আমেরিকার ভিসানীতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান। 

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। 
আকু পেমেন্টে কয়েকটি ব্যাংকে স্যাংশনস দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো স্যাংশনস দিলেই তা শঙ্কিত হওয়ার। এরপরও ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন, আকু পেমেন্ট অন্য কোনোভাবে পেমেন্ট করা যাবে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমেরিকার ভিসানীতিটা যে কারও ওপর হতে পারে। আবার আমি গত ৩০ বছর ধরে ৫ বছর করে আমেরিকার ভিসা পাই। এরপরও আমি আমেরিকা যাওয়ার পর আমাকে বলতে পারে তোমার ভিসা বাতিল করা হলো। এভাবে কারও ভিসা বাতিল করা হয়।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কারও ভিসা বাতিল হলেও তিনি ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন। আমরা কোভিড সময়ে কোনো দেশে যেতে পারিনি। এরপরও আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়নি। সেক্ষেত্রে বলা যায় ভিসা বাতিল হলেও বিকল্পভাবে তিনি তার ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আকু পেমেন্টে কিছু ব্যাংকের ওপরে স্যাংশনস বিষয়ে তিনি বলেন, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকু হচ্ছে একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিকারী সংস্থা। এর পেমেন্ট কয়েকটি ব্যাংকের ওপর স্যাংশনস হয়েছে তবে সেটা অন্য কোনোভাবে পেমেন্ট করা যাবে। সেভাবেই সরকার কাজ করবে। তবে যেকোনো স্যাংশনসই শঙ্কিত হওয়ার, তবুও আশাবাদী ব্যবসায়ী তার ব্যবসায় প্রভাব পড়বে না।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘গত ১০ বছরে পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৩২০ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার অংকে প্রায় ২৬ লাখ কোটি টাকা। আর গত ৫ বছরে পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার অংকে প্রায় ১৬ লাখ কোটি টাকা। এই টাকাগুলো কিন্তু আমরা রফতানি করে আমাদের দেশের মধ্যেই এনেছি এবং এই যে রফতানিটা আমরা করতে পেরেছি, এটা কিন্তু সহজ কাজ ছিল না। এর জন্য আমাদেরকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। অনেক বিনিয়োগ করতে হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক চড়াই উৎরাই অতিক্রম করতে হয়েছে।’

ফারুক হাসান বলেন, ‘আজ আমাদের পোশাক শিল্প ৪৭ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত হয়েছে। শুধু বিলিয়ন ডলার না, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ৫ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বৃহত্তর অর্থনীতিতে আমাদের যে আরো ট্রানজেকশনগুলো আছে সবকিছুই। এই বিষয়গুলো সব সময় গভীরভাবে দেখা হয় না। এই শিল্পের মাধ্যমে যে ক্যাপিটাল ফর্মেশন হচ্ছে, সেটি আরো অনেক সম্ভাবনাময় শিল্পের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে বলে আমরা মনে করি।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফারুক হাসান আরো বলেন, সম্প্রতি কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের জারিকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। গণমাধ্যমে  ‘পোশাক রফতানির আড়ালে ৩০০ কোটি টাকা পাচার’, ‘পোশাক রফতানির আড়ালে ১০ কোম্পানির ৩০০ কোটি টাকা পাচার’ এ রকম শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের চিঠি, এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি কার স্বার্থে করা হয়েছে? আমরা মনে করি এটা আমাদের অর্থনীতি, শিল্প, দেশ অথবা সরকার, কাউকেই সুবিধাজনক অবস্থানে নিচ্ছে না। 

কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা এখনো তদন্তই হয়নি সেগুলো নিয়ে সমগ্র শিল্প খাত নিয়ে ঢালাও মন্তব্য মোটেও কাম্য নয় জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের ডাকবে, তদন্ত করবে। তারা যদি অসাধু তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিচারের আওতায় আনবে। উল্লেখিত বিষয়টাকে এভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে জনসম্মুখে তুলে ধরে জাতির কাছে শিল্পকে ছোট করাটা আমরা একটি অপচেষ্টা বলে মনে করি। আমরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।

১০টি কারখানার বিষয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, কারখানাগুলোর মধ্যে ৪টি বিজিএমইএর এবং ২টি বিকেএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠান। অবশিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিজিএমইএ/বিকেএমইএর সংশ্লিষ্টতা নেই। বিজিএমইএ’র ৪টি সদস্য প্রতিষ্ঠান হলো- ফ্যাশন ট্রেড, প্রজ্ঞা ফ্যাশন, অনুপম ফ্যাশন ওয়্যার ও হংকং ফ্যাশনস। বিকেএমইএর দুটি সদস্য প্রতিষ্ঠান হলো- পিক্সি নীট ওয়্যার ও ইডেন স্টাইল-টেক্স। আমরা আমাদের সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর কাছে নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চেয়েছি। তারা লিখিত বক্তব্য দিয়েছে। কারখানাগুলোর প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত আছেন। যে উত্তরগুলো তারা দিয়েছে, আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। 

ফারুক হাসান বলেন, যদি কেউ অভিযুক্ত হন তবে তাদের ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথভাবে তদন্ত করেন, প্রমাণ করেন। তারপর তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনেন। আপনারা এই বিষয়টি ঢালাওভাবে মিডিয়াতে দেয়ার ফলে সামগ্রিকভাবে এই শিল্পটি হেয় হয়েছে। যেখানে আমরা এত কিছু করছি আমাদের সেক্টরের ইতিবাচক বিষয়গুলোকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার জন্য সেখানে এরকম কাণ্ডজ্ঞানহীন পদক্ষেপ মেনে নেয়া যায় না।

এ শিল্পটিকে নিয়ে যারাই প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন, তারাও যেন দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই শিল্পটিকে বিচার করেন জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন,  আমাদের একান্ত প্রত্যাশা পোশাক শিল্পের বিষয়ে যে কোনো প্রতিবেদন, যেখানে কিনা অংশীজনদের মতামত নেই, কোনো ভ্যালিডেশন নেই, সেই প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন। একটি শিল্পের বিরুদ্ধে ঢালাও ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি শহিদুল্লা আজিম, সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শিদী, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ।

এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,