মাদ্রাসার মাঠে ধান চাষ
Published : Tuesday, 24 August, 2021 at 2:22 PM Count : 671
কোথাও পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কোথাও হাটু সমান পানি তার মাঝেই জেগে উঠেছে ধানের গাছ। ধান কোথাও বেড়ে উঠেছে পানির উপরে কোথাও পানিতে ডুবে রয়েছে। তবে এটি কোন প্রকৃত আবাদী জমি নয়।
এটি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের চন্দনচহট আলহাজ্ব ইমার উদ্দীন দাখিল মাদ্রাসার খেলার মাঠ।
মাদ্রাসার সুপার জানান, করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাদ্রাসার মাঠটিতে নৈশপ্রহরী রোপা আমন ধান রোপণ করেছেন। সে গরীব মানুষ। বিল-বেতন নাই। তাই তাকে ধান চাষাবাদের অনুমতি আমি দিয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এ চাষাবাদ করার সুযোগ থাকবে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসাটি নেকমরদ থেকে বালিয়াডাঙ্গী মহাসড়ক ঘেঁষে অবস্থিত। দূর থেকে দেখে চেনার উপায় নেই যে এটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাদ্রসাটির চারপাশে ধানের আবাদ হচ্ছে। এমনকি মাদ্রাসাটিতে প্রবেশের তেমন কোন পথও নেই।
কারণ মাদ্রাসার প্রবেশ পথ এখন চাষাবাদের জায়গায় রুপান্তর হয়েছে।
একটি বাড়ির পাশ দিয়ে পানি মাড়িয়ে মাদ্রাসাটিতে প্রবেশ করেন এ প্রতিবেদক। সেখানে দেখা যায়, সাইনবোর্ডহীন মাদ্রাসাটির ছয়টি কক্ষ রয়েছে। তাতে দুটি কক্ষে কিছু টেবিল বেঞ্চ জটলা করে রাখা হয়েছে। একটি রুমে মাদক সেবনের কিছু উপকরণ আর একটি রুমে ভুট্টার ডাটা স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
মাদ্রাসার বারান্দায় খড়ির স্তপ করে রাখার কারণে আরেকটি রুমে প্রবেশ করা যায়নি। মাদ্রাসাটির প্রায় প্রত্যেক রুমেই দরজা জানালা নেই।
কথা হয় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী হামিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, রোপা আমনে ধান চাষ করতে তেমন পানির প্রয়োজন হয় না। পানি সব সময় মাঠজুড়ে জমে থাকে। বিল বেতন নেই প্রায় ২২ বছর। মাঠটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। মাদ্রাসাও বন্ধ। তাই সুপারকে বলে ধান চাষাবাদ করছি।
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসা মাঠের ২৫ কাঠা জমিতে তিনি প্রায় চার বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন।
মাদ্রাসার সুপার মনতাজ আলী কাজী মুঠোফোনে বলেন, নৈশপ্রহরী হামিদুর রহমান গরীব মানুষ। তাছাড়া মাদ্রাসার বিল বেতনও নেই। তাই সে রোপা আমন চাষাবাদ করতে চাইলে অনুমতি দিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে এক একর চার শতক জমিতে স্থাপিত হয়েছে মাদ্রাসাটি। বর্তমানে প্রায় ২২৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। আদৌ বিল বেতন হবে কি না সন্দেহ রয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলী শাহরিয়ার মুঠোফোনে বলেন, এই মাদ্রাসাটি চলমান কি না আমার জানা নেই। তাছাড়া আলহাজ্ব ইমার উদ্দীন মাদ্রাসা নামে দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে কি না তাও আমার জানা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে কেউ চাষাবাদ করতে পারে না।
-এমএ