বিদ্যালয়ের জমি দখল করে বিক্রি
Published : Wednesday, 19 May, 2021 at 4:46 PM Count : 247
ভোলার চরফ্যাশনের ২ নং হাসানগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে দোকান ভিটা তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির কিছু সদস্যকে প্রভাবিত করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মফিজল হক এই জমি বিক্রি করছেন।
রেকর্ড জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের জমি দখল ও বিক্রির প্রক্রিয়া করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয় মফিজল ও তার ভাই আবুল কালাম পাটওয়ারী ১৭৭৫ সালে এসএ ৩২ খতিয়ানের ৮৫৬ দাগের ৫০ শতাংশ জমি হাসানগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য দান করেন। পরবর্তী মাঠ জরিপে ওই জমি বিদ্যালয়ের নামে দখল দেখানো হয়। কিন্ত জরিপকারীদের ম্যানেজ করে দাতারা এই জমিকে বাগান দেখিয়ে দিয়ারা ও প্রিন্ট খতিয়ানে এসএ রেকর্ড অনুযায়ী নিজেদের নামের রেকর্ড বহাল রাখেন। এই রেকর্ড জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল ও বিক্রির পথ তৈরি করা হয়।
যার পথ ধরে দাতা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মফিজল হক ওই জমি দোকান, ভিটা আকারে স্থানীয় মানুষের কাছে বিক্রি করছেন। ইতিমধ্যে স্থানীয় জুলফিকার, মো. ফরিদ ও লিটনসহ চার জনের কাছে চারটি ভিটা বিক্রি করা হয়েছে। ক্রেতারা ওই জমিতে দোকান তৈরির উদ্যোগ নিয়ে নিয়েছেন।
পাশাপাশি মফিজল হকের বোন রিজিয়া বেগম ও তার ভাই রেকর্ড সূত্রে ওই জমিকে পৈত্রিক জমি দাবি করে নিজেও একটি দোকান উত্তোলন করেছেন। ফলে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ শিশুদের লেখাপড়ার সার্বিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৈয়বা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের জমি বেদখলে যাচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
জানা যায়, ইউএনও'র নির্দেশে সহকারী কমিশনারের (ভুমি) কার্যালয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ওই জমির মালিকানা ইস্যুতে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই শুনানীকালে মফিজুল হক জমি পরিমাপ করে বিদ্যালয়কে বুঝিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলেও দখল এবং বিক্রির প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখেন। ফলে ৪৬ বছর দখলে থাকা বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত মফিজল হক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ভিটা বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে জমি দাতা আমি এবং আমার অপর ভাই। আমরা ৫০ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ে দান করেছি। বিদ্যালয়ের জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ চলমান আছে। আর আমাদের রাস্তা সংলগ্ন অপর জমিতে আমরা দোকান নির্মাণ করছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৃষিত কুমার চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সহকারী কমিশনার (ভুমি) রিপন বিশ্বাসকে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন ইউএনও।
ইউএনও মো. রুহুল আমিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিদ্যালয়ের জমি দখল কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
-এমএ