For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ইন্দোনেশিয়ায় ফের সুনামি শঙ্কা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২২

Published : Monday, 24 December, 2018 at 10:04 AM Count : 240


ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা উপকূলে ভয়াবহ সুনামির আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২২ জনে। আহত হয়েছেন ৮ শতাধিক এবং ২৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে প্রচণ্ড গতিতে সুনামি আঘাত হানে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মাঝামাঝি সুন্দ্রা প্রণালীতে অবস্থিত আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত অব্যাহত আছে। এর ফলে আবার সুনামির আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। আর শনিবার রাতে সৃষ্ট সুনামিতে সবশেষ নিহতের সংখ্যা ২২২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৪৩ জন।

গত শনিবার রাতে উপকূলীয় এলাকা 'বানতেন'-এর একটি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস থেকে এ সুনামির সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যেই সমুদ্রের উচ্চমাত্রার জলতরঙ্গ পর্যটনসমৃদ্ধ সৈকতে এসে আছড়ে পড়ে। ভেসে যায় শত শত মানুষ। ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা।

কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সুনামিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। শনিবারও সেরাংয়ের ‘আনাক ক্র্যাকাটোয়া’ থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। এর ফলে আকাশে সৃষ্টি হয়েছে ছাই-মেঘের। সেরাং ছাড়াও সুনামির আঘাতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্যানডেংলাং ও দক্ষিণ লাম্পুং এলাকা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রথাগত বা স্বাভাবিক ভূমিকম্পের কারণে এই সুনামির সৃষ্টি হয়নি। ‘আনাক ক্র্যাকাটোয়া’ আগ্নেয়গিরির উদগিরণ শুরু হলে তার অভিঘাতে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধস হয়। এ থেকেই সৃষ্টি হয় সুনামির। পূর্ণচন্দ্রের প্রভাবে সমুদ্রের জলতরঙ্গ ব্যাপক উচ্চগতিতে সৈকতে এসে আছড়ে পড়ে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র সুনামির আঘাতের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে, যানবাহন তাতে ভেসে যাচ্ছে।

আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ জেস পোনিক্স বলেছেন, যখন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সৃষ্টি হয়, তখন তার গরম ম্যাগমা সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে আঘাত করে। এতে ভূমিধসের সৃষ্টি হয়। আর তা থেকেই তৈরি হয় সুনামি।

১৮৮৩ সালে ‘ক্র্যাকাটোয়া’ আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। সে সময় উত্তপ্ত লাভায় পুড়ে ছাই হয়ে মারা যায় কয়েক হাজার মানুষ। ওই সময় অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ১৩৫ ফুট উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। এর ফলে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ সমুদ্রে ভেসে যায়।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই সুপ্ত আগ্নেয়গিরি ফের সচল হতে দেখা যায়। ইন্দোনেশিয়ার জিওলজিক এজেন্সি জানিয়েছে, গত শুক্রবার ‘ক্র্যাকাটোয়া’ আগ্নেয়গিরি থেকে দুই মিনিট ১২ সেকেন্ড অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। এর ফলে চারশ মিটার বা এক হাজার তিনশ ফুট উঁচুতে ছাই-মেঘের সৃষ্টি হয়।

ইন্দোনেশিয়া ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কারণ, এটি ‘রিং অব ফায়ার’ নামক ভয়াবহ এক আগ্নেয়গিরির চক্রের ওপরে অবস্থান করছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর যাদের অবস্থান, সারা দুনিয়ার এমন যত জীবন্ত আগ্নেয়গিরি রয়েছে, তাদের অর্ধেকের বেশি এই চক্রের অন্তর্ভুক্ত।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার পালু শহরের বালারোয়া ও পেতোবো এলাকার ভূমিকম্প ও সুনামিতে মাটি তরল হয়ে হাজারো মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তাতে প্রায় দেড় হাজার মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আগস্টের ৫ তারিখে আঘাত হানা ভূমিকম্পে দেশটিতে ৪৬০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ভারত মহাসাগরের উপকূলজুড়ে ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ইন্দোনেশীয় ছিল।

-এমএ

≫ ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৮
≫ অগ্ন্যুৎপাত থেকে সুনামি, ইন্দোনেশিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২
≫ ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি, নিহত ৪৩

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,