‘আগামী বছর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। যারা ওই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করবে কেবলমাত্র তারাই পরীক্ষা দিতে পারবে। ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে ৫০ লিখিত ও ৫০ নৈর্ব্যক্তিক থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
এদিকে, রাবি ভর্তি পরীক্ষায় কোটা বাতিল নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি এবং এরকম কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার। বিকেলে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দেওয়া বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি বলে দাবি করেন।
জনসংযোগ প্রশাসক ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার বলেন, ‘কোটা থাকবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী বছর ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে কোটা থাকবে কি থাকবে না।’
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনার্স ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্যের বক্তব্য হিসেবে ‘সরকার যখন কোটা বাতিল করেছে, তখন আগামী বছর থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা থাকবে না। সাধারণত আমরা যা চিন্তা করি, ভবিষ্যতেও চিন্তা করে দেখবো কোটা থাকবে কি না। সরকার হয়তো আন্ডার প্রিভিলেজড, প্রতিবন্ধী, উপজাতিদের জন্য কোটা রাখার বিষয়ে বিবেচনা করবে। ভর্তি পরীক্ষায় এ ধরণের কোটা থাকতে পারে।’ এমন বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হয়। এই বিষয়টি সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
তবে পোষ্য কোটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যাল উপাচার্য বলেছেন, ‘এখানে যেটা ওয়ার্ড কোটা হিসেবে আছে সেটা কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন তাদের জন্য এটা কিন্তু অতিরিক্ত। এ সিটগুলো ছাত্রদের সিটের বাইরে। তারপরেও তাদের কিন্তু একটা যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। সেটি উত্তীর্ণ না হলে ভর্তি হতে পারবে না। এটি একেবারে রিলিফ দেওয়ার মতো না। এখানে ঢালাওভাবে ভর্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান আল আরিফ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, রাবির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্মাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু সোমবার সকাল ৮টায় ‘সি-১’ (বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ) গ্রুপের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টায় ‘সি-২’, দুপুর ১২ টায় ‘ডি-১’ (জীব, ভূ-বিজ্ঞান ও কৃষি অনুষদ), আড়াইটায় ‘ডি-২’ এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় ‘বি-১’ (বিজনেস স্টাডিজ ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট) গ্রুপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দিন সকাল ৮টায় ‘বি-২’, সকাল ১০টায় ‘ই-১’ (সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদ), দুপুর ১২টায় ‘ই-২’, আড়াইটায় ‘এ-১’ (কলা ও চারুকলা অনুষদ) এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় ‘এ-২’ গ্রুপের পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৩২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ বছর পাঁচটি ইউনিটের আওতায় ৫৯টি বিভাগে মোট চার হাজার সাতশোটি আসনের বিপরীতে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০টি প্রবেশপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষার হলে মোবাইল, ক্যালকুলেটর, ঘড়িসহ সকল প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আরএইচএফ/এইচএস