নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত করে ও তার নেতৃত্বে দেশ গড়ার কাজে মনোযোগী হতে নোবিপ্রবি পরিবারের সকলকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার যোগ্য নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তানীরা পিতা মুজিবকে বন্দী করেছিলো। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, তোমরা যদি আমাকে ফাঁসিও দাও, ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে আমি বলবো আমি বাঙালি, আমি মুসলমান আমি মানুষ।
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিছ অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, পচাত্তরে বঙ্গন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে এদেশকে নব্য পাকিস্তান বানানো হয়েছিলো। তখনকার সরকার স্বাধীনতাবিরোধীদের দেশে ফিরিযে এনে নাগরিকত্ব ও মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলো। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য তনয়া শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগসহ অর্থনীতির সকল সূচকে উন্নয়নের মহাসড়কে। পদ্মা সেতু, রুপপুর ও মাতারবাড়ি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, কর্ণফুলীর তলদেশে ট্যানেলসহ বৃহৎ সব প্রজেক্টের কাজ আজ চলমান। এটাই বিজয়ের সুফল, মহান বিজয় দিবস স্বার্থক ও সফল হোক। তিনি আরো বলেন, তরুণরাই ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছিলো। এবারের নির্বাচনেও তরুণ প্রজন্ম তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৪৮তম মহান বিজয় দিবস ২০১৮ উদযাপন করা হয়। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে র্যালি, আলোচনা সভা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের ‘বিশ্ববিদ্যালয় বার্তা-২০১৮’ মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন বিভাগ ও ছাত্রসংগঠনসমূহ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটি উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
সকাল ৯টায় নোবিপ্রবি পরিবারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্ত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। পরে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও মূলফটকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। পরে বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়কবৃন্দ, নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ ও কর্মচারীবৃন্দ স্ব স্ব সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিছ অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্র নির্দেশনা পরিচালক ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান।
অন্যদের মাঝে আরো বক্তব্য রাখেন, নোবিপ্রবি’র কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আবুল হোসেন, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সৈয়্যদ আতিকুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. মমিনুল হক, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. দিব্যদ্যুতি সরকার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবদুল্লাহ-আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মাহাবুবুর রহমান, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মো. মোখলেস-উজ-জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক এস এম ধ্রুব, কর্মচারীদের পক্ষে মাহবুবুর রহমান রিপসন।
এসময় অনুষদসমূহের ডিন, ইনস্টিটিউট ও দপ্তরসমূহের পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক, নোবিপ্রবি অফিসার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বিজয় দিবসকে আনন্দমুখর করে তুলতে ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও মহান বিজয় দিবস এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে চার দিনব্যাপি কর্মসূচি পালন করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর রাত ১১.৫০ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহীদ মিনারে কালো ব্যাজ ধারণ করে নিষ্প্রদীপ মহড়া ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়। শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর ২০১৮) নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্ত আলোচনা সভা, মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে। শনিবার (১৫ ডিসেম্বর ২০১৮) নোবিপ্রবি’র প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাঙলো, অডিটরিয়াম, প্রধান ফটক, একাডেমিক ভবন, ছাত্র ও ছাত্রীহলের অংশ বিশেষ আলোকসজ্জা করা হয়।
নোবিপ্রবি জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসাইনের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
এইচএস