For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

নিয়োগ-বাণিজ্য করেই শতকোটি টাকার মালিক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওয়াদুদ দারা

Published : Friday, 6 September, 2024 at 8:15 PM Count : 111

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন আব্দুল ওয়াদুদ দারা। ওই আসনে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ১০ বছর এমপি ছিলেন তিনি। এমপি হওয়ার পর শুধু শিক্ষা-বাণিজ্য করেই শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

এছাড়া সরকারি পুকুর ইজারা, পুকুর খনন, বিভিন্ন প্রকল্পের কমিশন আদায়তো ছিলই। এতে এমপিসহ তার পরিবারের সব সদস্যের উন্নতি হলেও নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়ন করেননি।

পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামে মাটির বাড়িতে তার বসবাস ছিল এই এমপির। বাবা আওয়াল কাজী ছিলেন বিয়ে রেজিস্ট্রার। বর্তমানে সেই স্থানে পাশাপাশি তিন ভাইয়ের জন্য তিনটি দোতালা বিলাসী ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দারা ২০০৯ সালে প্রথম যখন এমপি হন তখন একটি ছোট গার্মেন্টের অংশীদার মালিক ছিলেন। তার মেয়েকে যুক্তরাজ্যে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছেন। সেখানে তিনি টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দারা এমপি থাকাকালীন তার এবং পরিবারের বিরুদ্ধে যারা গিয়েছেন তাদের একের পর এক হত্যার শিকার হতে হয়েছে। যারা হত্যার শিকার হয়েছেন তারা সবাই তার বাড়ির আশপাশের লোকজন। নিহতরা হলেন- আবু দাউদ ও তার ছেলে নুহু। তার চাচাতো ভাই রয়েল। চাল ব্যবসায়ী আবুল ও তার স্ত্রী।
এ আসনে ১৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথমে এ আসনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার নামে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ১০ বছরে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন ১০ জন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিটি চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লাখ থেকে ৩০ লাখ পর্যন্ত টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

দারার চাচা বিড়ালদহ বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলীউজ্জামান মুন্টু ছিলেন নিয়োগ-বাণিজ্যের প্রধান। দুই উপজেলা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নেওয়ার জন্য এমপির বাড়িতে টাকার চুক্তি করতে আসতেন। নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছে চুক্তির ব্যাপারে কথা বলতেন চাচা মুন্টু। তখন মুন্টুর উপাধি ছিল শিক্ষামন্ত্রীর নাম। দারা যতদিন এমপি ছিলেন ততদিন তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শিক্ষকদের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক ছিল।

মুন্টু বাদে আরও কয়েকজন নিয়োগ বাণিজ্যের চুক্তি করতেন। এরা হলেন- উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সাবেক মেয়র রবিউল ইসলাম রবি, ধোপাপাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান মুন্টু।

এদিকে, দারার চাচাতো ভাই শরীফ কাজী নিয়ন্ত্রণ করতেন দুই উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ বিষয়ের বাণিজ্য। কোনো এলাকায় নতুন বিদ্যুৎসংযোগ দিলে তাদের কত টাকা আয় হবে-তা দেখভালের দায়িত্ব ছিল তার। দারার আরেক চাচাতো ভাই রিপন টানা ১০ বছর উপজেলা পর্যায়ের সব টেন্ডার বাগিয়ে নিয়ে নিজে কাজ করতেন। পুঠিয়া-দুর্গাপুর নির্বাচনি এলাকায় সরকারি কয়েকশ খাস পুকুর রয়েছে। প্রতিবছর পুকুরগুলো পানির দামে ইজারা দিয়ে কোটি আয় করেছেন দারা চক্র।

এছাড়া, দুই উপজেলার কাবিখা-কাবিটারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে তিনি নিতেন। সমেন ঘোষ নামে একজনকে মাস্টাররোলে ওই অফিসে নিয়োগ দেওয়া হয়। সমেন প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কামিশনের টাকা উঠিয়ে দারাকে দিতেন। সেই সমেনও বর্তমানে কোটিপতি।

জানা যায়, দারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে নাটোরে বিদ্যুতের কুটল্যান্ড প্যানেলসহ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় কমিটির সভাপতিও হয়েছিলেন। তার সময়ে ব্রাজিল থেকে কয়েক হাজার টন পচা গম আমদানি করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে আব্দুল ওয়াদুদ দারার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আব্দুল ওয়াদুদ দারা শুধু শিক্ষা খাত থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরএইচএফ/এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,