For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ফেনীতে মাসুদ-নিজাম হাজারীসহ ৩৫৫ জনের নামে হত্যা মামলা

Published : Friday, 6 September, 2024 at 7:29 PM Count : 138



ফেনীর মহিপালে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত হন টমটম চালক জাফর আহাম্মদ। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ ২০৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত জাফর আহাম্মেদের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা নং- (০৩) ০৫.০৯.২০২৪ইং দায়ের করেন। নিহত জাফর সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের ওবায়দুল হকের বড় ছেলে। তিনি পেশায় একজন টমটম চালক ছিলেন।
মহিপালে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ এ পর্যন্ত ৮টি মামলায় ২ হাজার ৯৪১ জনকে আসামি করা হয়। এর আগে পৃথক পৃথক আরও ৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। সবকটি মামলা নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক এমপি হাজী রহিম উল্ল্যাহ, ফেনী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার মজুমদার তপন, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী,জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার, পরশুরাম পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়া।

এছাড়াও অন্য আসামিরা হচ্ছেন - ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্লাহ বিকম প্রকাশ রেন্সু করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন প্রকাশ চামড়া নিজাম, ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কহিনুর আলম রানা, আমির হোসেন বাহার, লুৎফুর রহামন খোকন হাজারী, বাহার উদ্দিন বাহার, জয়নাল আবেদীন লিটন হাজারী, সাইফ উদ্দিন রুপম, ফেনী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী, মহীপাল চৌধুরী বাড়ির মামুন চৌধুরী, ফাজিলপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, জায়লস্কর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিলন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তফু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য নুরুল আফছার আপন, কদলগাজী রোডের ইকবাল হোসেন বাবলু, বিরিঞ্চি সোনাপুরের ওসমান গণি লিটন, ছনুয়া ইউনিয়নের শেখ ফরিদ, ছালাহ উদ্দিন ফিরোজ, সোনাগাজীর নুরুল ইসলাম ভূট্টু, রামপুরের রেজাউল করিম নাদিম, আবদুল কাদের শিপন, বিরিঞ্চির আবুল কালম ওরপে গরু কালাম, চাড়িপুর কুসুমবাগের মফিজুর রহমান বাবুল, একাডেমীর নুর করিম জাভেদ, তেমুহনির ফরিদ মানিক, দক্ষিণ চাড়িপুরের বোরহান উদ্দিন বাচ্চু, মৌটবী সাহাপুরের হুমায়ুন কবির মানিক, চর কালিদাসের জাহিদ হোসেন বাচ্চু, নাজির রোডের চাকমা জাভেদ, শর্শদি ইউনিয়নের শফিকুল ইসলাম সম্রাট, জাভেদ হায়দার জর্জ, মোর্শেদ আলম মেম্বার, আবদুল আলী মেম্বার, ইয়াছিন মানিক, ওসমান গণি রিয়েল, জিয়া উদ্দিন মেম্বার, খানে বাড়ির শহিদুল ইসলাম, সাগর মেম্বার, জসিম উদ্দিনভুট্টু, বালিগাঁও ইউপির কাতালিয়ার আবদুস শুক্কুর মানিক, শেখ কামাল, হকদির করিম উল্লাহ আজাদ, মরুয়ারচরের জিয়া উদ্দিন বাবলু, ধুমসাহাদ্দার রেজাউল হক, সোনাগাজীর মোশারফ হোসেন বাদল, ধর্মপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শাকা, লেমুয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান তালুকদার, উত্তর সহদেবপুরের নোমান হাবীব, মাস্টার পাড়ার শরীফ হাজারী, কালিদহ আলোকদিয়ার আবদুল জলিল আদর, পূর্ব গোবিন্দপুরের সেলিম উল্লাহ খান, ধলিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মুন্সী, রামপুরের সাজ্জাদ হোসেন রাজন, ছাগলানাইয়া পাঠাননগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জুয়েল, ফরহাদনগর নৈরাজপুরের ফোরকান চৌধুরী, ফুলগাজী বন্দুয়ার আসিফ পোদ্দারসহ আরো অনেকে। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের এসব নেতাকর্মীরা পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন কর্মসূচিতে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্চায় অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহনের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ হয়। ওইদিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়াসহ আরো ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী আছিয়াকে হুমকি দেন। তারা তার স্বামীকে সামনে পেলে হত্যা করবে। ভয়ে আছিয়া তার স্বামীকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন। জাফরও তার স্ত্রীর কথামত সেদিন আর বাসায় যায়নি। পরদিন ৪ আগষ্ট দুপুরে মামলার ১/২নং আসামির নির্দেশে অন্য আসামিরা তার স্বামী জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডস্থ জেলা কারাগারের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে, পিটিয়ে হত্যা করে চলে যায়। পরে তিনি (স্ত্রী) খবর পেয়ে তার স্বামীকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাফরকে মৃত ঘোষণা করে। আসামীদের অব্যাহত হুমকি ধমকির কারণে প্রাণভয়ে তিনি স্বামী জাফরের লাশ গোপনে দাপন করেন। এরপর তিনি দেশের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারনে থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকায় মামলা করতে কিছুদিন বিলম্ব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি তার স্বামী জাফর হত্যায় জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।

ফেনী মডেল থানার এসআই নাজমুল হাসান তানিম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাফর আহাম্মদ হত্যা মামলার তদন্তভার আমার হাতে এসেছে। মামলায় জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান শুরু করেছি।

টিবি /এসআর


« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,