ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুস্থ ভাতা পেতেন আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিক
Published : Thursday, 29 August, 2024 at 9:53 PM Count : 149
দূর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের দুস্থ ও অসহায়দের ভাতা আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিক ও বিত্তবানদের মাঝে বিতরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সরকারি একাধিক সূত্র। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যা দুর্গত-নদী ভাংগন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তিদের বরাদ্দকৃত টাকা যাদের নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছে যেখানে দেখা গেছে প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার (১১৪,পটুয়াখালী ৪) আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ নেতা, বিত্তবান, ইউপি সদস্য, প্রতিমন্ত্রীর কাছের ব্যক্তি এবং সাংবাদিকদের নাম।
তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ৯ জুন ২০২৪ তারিখে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বনিকের স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে ১২৩ জন ব্যক্তির অনুকূলে প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেখানে সর্বমোট টাকার পরিমাণ ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
মোট ১২৩ জনের নামের যে তালিকা প্রকাশ পেয়েছে সেখানে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য বাবু অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুব আকন, প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাস্বার ইউপির ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহআলম, মহিপুর থানা শ্রমিকলীগের সভাপতি কালাম ফরাজি, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু, ধূলাসসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার ,বাংলা টিভির কুয়াকাটা প্রতিনিধি মনির হাওলাদার,আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকিরসহ এই তালিকায় বেশীরভাগই স্বচ্ছল ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাংবাদিকদের নাম রয়েছে। তারা সকলেই সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য বাবু অনন্ত মুখার্জি বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ে ৫০০০ টাকা ইউএনও অফিসের মাধ্যমে একবার পেয়েছিলাম। এর বাইরে আমার আর কিছু জানা নেই।
কুয়াকাটার সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, উপকূলীয় এলাকার মানুষ তাকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়েছিল। তবে প্রতিবন্ধী বা অসহায়দের টাকা কাছের মানুষেদের সে দিয়েছে। এর থেকে আর খারাপ কিছু থাকতে পারে না। এটি দুঃখজনক। তালিকাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরে সকল মানুষ নিন্দা জানাচ্ছে।
এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এই অনুদান সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। কে কে এই অনুদান পাবে সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তার। সরকারি টাকা আমার মাধ্যম হয়ে তালিকৃতরা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে এই টাকা বিতরণ করা হয়ে গেছে। ওই তালিকা যাদের নাম আছে প্রত্যেকেই নিজে নিজে টাকা গ্রহণ করেছে।
পিএম/এসআর