৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা
Published : Sunday, 14 July, 2024 at 3:06 PM Count : 101
ফেসবুকে প্রেম, ভালোবাসা ও অভিভাবকের অমতে বিয়ে করে যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ।
শনিবার রাত ১০টার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রোববার সকালে গৃহবধূ সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃত জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপনের স্ত্রী ও উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের আবু বকর সিদ্দিকের কন্যা।
জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় থেকে ৮ মাস আগে শিপনের সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। অভিভাবকের অসম্মতিতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না শিপনের পরিবার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়া ঝাটি লেগে থাকত। এমনকি শিপন বিয়ের পর যৌতুকের আট লাখ টাকার জন্য সুমাইয়াকে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করতো। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে সাত পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, বিয়ের গোসলটাও পেলাম না। শেষ গোসলটাও পাব না। জানাযাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সাথে থাকতে দিলা না। আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালো ভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাইনি।
বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিওনা। আমি তাহলে কষ্ট পাব।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভূঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
-এমএস/এমএ