বরগুনার
আমতলীতে সেতু ভেঙে বিয়ের যাত্রীবাহী গাড়ি খালে পড়ে নয় জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় চার জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনো তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া বাজার সংলগ্ন সেতুতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মাদরীপুরের শিবচরের মুনী বেগম (৪০), বড় মেয়ে তাসফিয়া (১১), ছোট মেয়ে তাহিয়া (৭), একই এলাকার ফরিদা বেগম (৫৫), রাইতি (৩০), ফাতেমা আক্তার (৪০), রুবী বেগম (৪০), হলদিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে হৃদি (৫) ও তার মা জাকিয়া বেগম (৩০)।
জীবিত উদ্ধার হওয়া চার জন হলেন- মাহবুব খান, সোহেল খান, সুমা আক্তার ও দীশা আক্তার। তারা সবাই শরিয়তপুরের বাসিন্দা।
জানা যায়, হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনির হাওলাদারের মেয়ে হুমায়রা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। ওই অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে তারা ১৬ জন হাইএসযোগে আমতলী ফিরছিল। পথিমধ্যে গাড়িটি হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার সেতু পার হওয়ার সময় মাঝ বরাবর ভেঙ্গে কচুরিপানায় ভরা খালে পরে তলিয়ে যায়। গাড়িটি খালে পরে যাওয়া শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে। মুশলধারে বৃষ্টি এবং খালে নেমে উদ্ধারের কোনো সুযোগ না থাকায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব ঘটায় অনেকেই তখন পানিতেই প্রাণ হারান। ধীরে ধীরে স্থানীয়রা নারী ও শিশুসহ নয়টি লাশ উদ্ধার করে। চার জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে তিন জন।
জীবিত উদ্ধার হওয়া মাহবুব খান বলেন, শুক্রবার আমরা ভাগ্নি হুমায়রা বেগমের বাড়ি হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামে যাই। সেখান থেকে একটি হাইএসযোগে শনিবার দুপুর ১টার দিকে ভাগ্নি জামাইর আমতলীর বাড়ির অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রওয়ানা করি। দুপুর দেড়টার সময় হলদিয়া বাজার সংলগ্ন একটি লোহার সেতু পার হওয়ার সময় হাইএসটি মাঝ বরাবর আসার পর আকস্মিক সেতুটির ২০ ফুট ধরে ধসে হাইএসসহ কচুরি পানায় ভর্তি খালে পড়ে যায়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আল্লায় মোগো বাচাইলেও সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে।
জীবিত উদ্ধার হওয়া আরেকজন বলেন, নয় জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। সাত জন আমাদের মাদরীপুরের শিবচরের স্বজন। অন্য দু'জন আমতলীর, তারাও আমাদের অত্মীয়। সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে। এর চাইতে আমাদেরও মইর্যা যাওয়া ভালো ছিল।
হলদিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার কাজে নেমে পরি। চার জনকে জীবত উদ্ধার করা গেলেও নয় জনের সলিল সমাধি ঘটে। এত বড় দুর্ঘটনা এবং এতগুলো লাশ আমার জীবনেও আমি আর দেখিনি।
দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। আবহাওয়া খারাপ ও মুশলধারে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজে কিছুটা বিলম্ব হয়।
-এসকে/এমএ