রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার ১১টি চরে শুকনো মৌসুমে মানুষের মালামাল বহনের একমাত্র ভরসা মহিষের গাড়ি। খরস্রোতা পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে চরে যোগাযোগ করতে হয় এই গাড়ি দিয়ে। আবার এ চরের অনেকেই মহিষের গাড়ির ওপর জীবিকা নির্বাহ করে।
পদ্মার মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চকরাজাপুরচর, কালীদাসখালী, লক্ষ্মীনগর, দাদপুর, উদপুর, পলাশী ফতেপুর, ফতেপুর পলাশী, নিচ পলাশী, চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, দিয়াড়কাদিরপুরসহ ১১টি চর রয়েছে। এ চরের মানুষ বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে মহিষের গাড়ি বা বাঁশের সাঁকো আবার কখনো পায়ে হেঁটে পারাপার হন। উপজেলার পদ্মা নদীর ক্যানেলের ওপর শিমুলতলাঘাট, চাঁদপুরঘাট, পালপাড়াঘাট, সরেরহাটঘাট, খায়েরহাট ক্লাবেরঘাট, খায়েরহাট হালিম মাস্টারেরসহ ছয়টি ঘাট রয়েছে।
মাহিম ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের স্কুলে যেতে হয় এই মহিষের গাড়ি দিয়ে। এই গাড়ি অনেক আস্তে আস্তে যায় সেজন্য স্কুলে যেতে অনেকসময় আমাদের দেরি হয়। এখানে যদি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করা যায় তাহলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হয়।
সেলিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, বিপদে-আপদে আমাদের শেষ ভরসা হচ্ছে এই মহিষের গাড়ি। আমাদের এই চর থেকে জরুরি কোনো কাজে কিংবা চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে হলে আমাদের অন্য কোনো উপায় নাই। একমাত্র উপায় হচ্ছে মহিষের গাড়ি। তাই আমি এখানকার জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলবো এখানে যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা হয়।
এই ঘাটের যে কোনো স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে চরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সহজেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানান স্থানীয়রা।
কামাল হোসেন নামের এক বাসিন্দা বলেন, চরের এইপাশ থেকে ওইপাশে যোগাযোগ করার জন্য যদি এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হয় তাহলে চরবাসীর কষ্ট লাঘব হয়। আমাদের এই চরেরর ২০ হাজার মানুষের প্রতিদিনের দুঃখ ঘুচবে।
এছাড়া পদ্মার মধ্যে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও কোনো উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ নেই। এ কারণে সেখানকার শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পাস করার পর যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়। যারা লেখাপড়া করেন, তাদের অনেক কষ্টে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় খায়েরহাট হালিম মাস্টারের ঘাটে ৬০০ মিটার একটি সেতুর জন্য কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে পাস হলে আশা করি কাজ শুরু হবে।
আরএইচ/এমবি