ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কললাতার নিউটাউন এলাকায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করার ঘটনায় থ সহিদুজ্জামান সেলিমকে আটকের দাবি করেছেন নিহত এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার এর মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও হত্যার পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন নিহত এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
ডরিন বলেন, আমি প্রশাসনের ভাইদেরকে বলতে চাই, আমার বাবার হত্যার পরিকল্পনাকারী মূলহোতা শাহিনের বড় ভাই পাশের উপজেলার (কোটচাঁদপুর) পৌরসভার মেয়র। তাকে কেন এখনো আটক করা হয়নি। তাকে আটক করুন, তাকে আটক করে জিজ্ঞাসা করুন।
কেন তার ভাই এতগুলো অপকর্মের সাথে জড়িত। কেন আমার বাবাকে হত্যা করা করে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। কেন সে একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তার ভাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে নি। একজন জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া। কিন্তু তিনি ( পৌর মেয়র) তা করেন নি। যদি সে অপরাধীকে শাস্তি দিত তাহলে আজ আমার বাবাকে হারাতাম না। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তার ভাইকে পাওয়া যাবে।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। ১৬ মে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। বুধবার (২২ মে) তাকে হত্যা করা হয়েছে খবর শোনার পর পুরো কালীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে চলছে শোকের মাতম। এখানো পর্যন্ত তার মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি ভারতের পুলিশ। এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুজ্জামান সেলিমের ছোট ভাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আক্তারুজ্জামান শাহীনের নাম উঠে এসেছে।
মানববন্ধনে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বলেন, আমি কালীগঞ্জ আসতে পারেনি। কষ্টে বুকটা ভেঙে গেছে। আমার বাবা যদি সত্যি অপরাধ করে থাকতো বা অপরাধী হয়ে থাকতো তাহলে সে ভারতে নেমে ভ্যানে করে ঘুরে বেড়াতো না, আমার বাবা হাসতে হাসতে, খেলতে খেলতে ইন্ডিয়ায় গেছে। আমরা সেই ভিডিও প্রকাশ করতাম না। সে অপরাধী হলে আমরা ভিডিও লুকিয়ে রাখতাম।
তিনি আরো বলেন, কালীগঞ্জের মানুষ শোনেন, যে সব সাংবাদিক ভাইয়েরা নিউজ করছেন, দয়াকরে একটু কালীগঞ্জে আসেন, আমার বাবার তো মেরেই ফেলেছে, বাবাকে তো আর পাবো না। আপনারা কালীগঞ্জে আসুন সাধারণ মানুষের কাছে জিজ্ঞেস করেন সাধারণ মানুষের সাথে তার কি সম্পর্ক ছিল। সে হাজার হাজার মানুষের জানাযা পড়িয়েছে। কিন্তু আজ সেই এমপির নিজের জানাযাই হচ্ছে না। এক টুকরো মাংস আমি পাইনি। আমি যখন শুনেছিলাম আমার বাবা নেই, তখন আমি ভেবেছিলাম আমার বাবাকে একটু ছুঁয়ে দেখবো। এতো কষ্ট আমি সহ্য করবো কি করে। এই দিনের কথা আমি কখনো ভুলবো না। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু একটা তাজা প্রাণ মেরে কিভাবে তারা টুকরো টুকরো করে, আপনারা কালীগঞ্জ বাসী এর বিচার করবেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ । এসময় উপস্থিত ছিলেন, নব-নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেনসহ আওয়ামী লীগের সকল ইউনিটের নেতাকর্মীরা ও শত শত সাধারণ মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
এসএমআর/এমবি