For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর হারাল মিয়ানমার সেনাবাহিনী

Published : Sunday, 7 April, 2024 at 10:58 AM Count : 178

মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর মায়াওয়াদ্দির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। 

শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বছর আগে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক বাহিনী আরেকটি বড় পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। আর এবার সেই পরাজয় ঘটেছে থাইল্যান্ডের সাথে দেশটির পূর্ব সীমান্তে।

জান্তার সৈন্যরা জাতিগত কারেন বিদ্রোহীদের আক্রমণের শিকার হওয়ার পর শহরটি তাদের হাতছাড়া হয়েছে। মূলত অন্যান্য অভ্যুত্থানবিরোধী বাহিনীর মিত্র হিসেবে জাতিগত কারেন বিদ্রোহীরা জান্তার সঙ্গে লড়াই করছে।
বিবিসি বলছে, মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর মায়াওয়াদ্দি রক্ষায় নিযুক্ত শত শত জান্তা সৈন্য এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে। এই শহরটি কৌশলগত ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ থাইল্যান্ডের সাথে মিয়ানমারের স্থলপথে বাণিজ্যের বেশির ভাগই মায়াওয়াদ্দির মধ্য দিয়েই হয়।

গত শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে, মায়াওয়াদ্দি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) পশ্চিমে থাঙ্গানিনাং শহরে অবস্থিত জান্তা বাহিনীর একটি ব্যাটালিয়নের সৈন্যরা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

আত্মসমর্পণের সময় নিজেদের উচ্ছ্বসিত যোদ্ধাদের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে এই গোষ্ঠীটি। ওই ভিডিওতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ অস্ত্রাগারও দেখিয়েছে তারা। এছাড়া সপ্তাহান্তে কারেন বাহিনী মায়াওয়াদ্দির ভেতরে জান্তা বাহিনীর শেষ অবশিষ্ট ব্যাটালিয়নের সাথেও আলোচনা করেছে। আলোচনার পর তারাও বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছে।

এটি মিয়ানমারের সামরিক জান্তার জন্য গুরুতর ধাক্কা। মূলত জান্তা সরকার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান প্রদেশে এবং বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে রাখাইন প্রদেশের পাশাপাশি চীনা সীমান্তের বিশাল এলাকা থেকেও বিতাড়িত হয়েছে।

আর একের পর এক পরাজয়ের মুখে পড়ার সময় হাজার হাজার জান্তা সৈন্য ইতোমধ্যেই হয় নিহত হয়েছে, অথবা আত্মসমর্পণ করেছে বা দলত্যাগ করে বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এই কারণে সামরিক বাহিনীকে লোকসান মেটাতে দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটছে।

কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে জাতিগত কারেন জনগণের জন্য স্ব-শাসনের দাবিতে লড়াই করছে। যদিও এই বাহিনী ১৯৯০-এর দশকে সরকারি বাহিনীর হাতে পরাজিত হয় এবং ২০১৫ সালের পর তারা দেশটির জাতীয় যুদ্ধবিরতির অংশও হয়েছিল।

তবে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন বা কেএনইউ তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। 
সে সময় কেএনইউ ঘোষণা করে, অং সান সু চির নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাতিল করছে তারা।

বিবিসি বলছে, যেহেতু কারেন প্রদেশটি মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি এবং থাই সীমান্তের যাওয়ার জন্য এটিই সর্বোত্তম রুট, অভ্যুত্থানের পরে বিক্ষোভের নৃশংস সামরিক দমনপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা ভিন্নমতাবলম্বীদের কাছে এটিই ছিল পছন্দের গন্তব্য।

পরে বিভিন্ন শহর থেকে পালিয়ে আসা অনেক স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দিতে সাহায্য করে কেএনইউ এবং পরে তারাই জান্তার সামরিক অবস্থানে নতুন করে আক্রমণ ও অভিযানে বিদ্রোহী এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেয়।

এছাড়া কেএনইউ কারেন প্রদেশের উত্তরে কারেননি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স এবং দেশের সুদূর উত্তরে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির মতো অন্যান্য বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথেও তার অপারেশনগুলোকে সমন্বয় করার চেষ্টা করছে।

মূলত কারেন প্রদেশে ক্ষমতার ভারসাম্য সম্প্রতি বিরোধীদের পক্ষে চলে গেছে। সেনাবাহিনী এই প্রদেশটিতে তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এমনকি সীমান্তের প্রধান সড়কগুলোর নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছে সেনাবাহিনী।

তবে জান্তা এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আরও বেশি বিমান হামলা চালিয়ে সেই ক্ষতির জবাব দিয়ে চলেছে।

কারেনের এই সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে আরও বিমান হামলার আশঙ্কায় আরও অনেক মানুষ এখনও থাই সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা গেছে।

-এমএ

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,