বিলুপ্তির পথে শাপলা ফুল
Published : Tuesday, 3 October, 2023 at 2:24 PM Count : 507
পুকুরের বিস্তীর্ণ পানিতে স্বল্প পরিসরে ফুটেছে লাল (রক্ত) শাপলা। সকালের নতুন সূর্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সদ্য ফোঁটা লাল শাপলার হাসিতে রোদ ঝলমলে সকালটা যেন অন্য দশটি সকালের চেয়ে ভিন্নতার সাক্ষ্য দেয়। লাল শাপলার হাসির আভায় মুহূর্তেই যেন দর্শনার্থীদের মুখেও ছড়িয়ে পড়ে ঝলমলে হাসি।সেই হাসিতেই ক্ষণিকের জন্য হলেও মুছে যায় দুঃখ-গ্লানি। সকল জীর্ণতার বেড়াজাল ছিন্ন করে নতুনত্বের আভাস ছড়ানো লাল শাপলার হাসিতে পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় বহুগুণ।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সাবেক উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনার সুমাইয়া আক্তারে বিশেষ উদ্যোগে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সরকারি যায়গায় পুকুর কখন করে সেখানে মাছ ফালানো হয় আর সেই পুকুরের সুন্দর্য্য বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন যায়গা থেকে এনে পুকুরের ছাড়িদিকে শাপলা ফুল পালানো হয়।
আর সেই ফুলগুলো (লাল রংঙের) পুকুরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। কিন্ত এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে শাপলা ফুল। এক সময়ের ভালোবাসা আর মনমুগ্ধকর ঘ্রাণ যেন ছিল শাপলা ফুলে মাঝে। তেমনি ছিল মানুষের মুখে মুখে একটা ফুলের নাম শাপলা, এক সময়ে এই শাপলা ফুল ছিল সবার মাঝে ভালোবাসার রং চুলের খোঁপায় গেঁথে থাকত আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা। কিন্তু হারাতে বসেছে সেই গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্য শাপলা ফুল।
ফুটন্ত ফুলের পাশেই আরও কলি পানি থেকে মাথা বের করে পূর্ণ ফুল হয়ে ফোঁটার প্রহর গুনছে। এ যেন সবুজ পাতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়েছে পুকুরের বিশাল জলরাশি। ভোরের সূর্যের আলোয় ফুটন্ত শাপলার চোখ জুড়ানো হাসি আশপাশের পরিবেশকে যেন আরও আলোকিত করে দেয়। মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরিবেশকে আরও আপন করে নেবার আয়োজন যেন উপচে পড়ছে। প্রকৃতি যেন তার নিজ হাতে ফুটন্ত লাল শাপলার হাসিকে সাজিয়ে দিয়েছে। লাল শাপলা যখন বিলুপ্তির পথে তখন গ্রামঞ্চলে পুকুরে লাল শাপলার উপস্থিতি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী, দর্শনার্থী সবাইকেই বিমোহিত করেছে।
শাপলা ফুল দেখে মুগ্ধ হন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাংলাদেশে আবহাওয়াগত দিক থেকে সাদা, লাল, বেগুনী, হলুদ ও নীল এই পাঁচ রঙের শাপলা আমদের দেশে জন্মালেও লাল এবং সাদা দুই ধরনের শাপলা বেশি দেখা যায়। গ্রামবাংলার আনাচে কানাচে হাওড় বিলে ঝিলে পুকুরে ডোবায় অহরহ দেখা মিলতো এ জলে ভাসা ফুলের, কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে শাপলা ফুল। বিভিন্ন ধরনের ফুলের সৌন্দর্য বাংলার বৈচিত্র্যময়তাকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, দর্শনার্থী সবাইকেই পুকুরের সামনে দিয়ে যাবার সময় লাল শাপলার সৌন্দর্যের মায়ায় একনজর থমকে দাঁড়াতেই হয়। কেননা সৃষ্টিগতভাবেই ফুলের সঙ্গে মানুষের হৃদয়ের অমোঘ বন্ধন। তাই ফুলের জাদুকরী বৈশিষ্ট্য মানুষকে সহসাই কাছে টানে।
জাতীয় এ ফুলকে শিক্ষার্থীদের প্রদর্শন করে দেখানোর জন্য গ্রামগঞ্জের কিছু কিছু পুকুর-দীঘিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এ ফুলের চাষাবাদ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে সরকারি খাস জায়গায় প্রতিষ্ঠিত পুকুর-দীঘি কিংবা পতিত জলাশয়ে মনোমুগ্ধকর এ ফুলের চাষাবাদ করা এখন সময়ের দাবি।শাপলা ফুল রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আশা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রকৃতিপ্রেমী সচেতনমহল।
এসএস/এমবি