বিদ্যালয় আঙ্গিনায় জলাবদ্ধতা
শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
Published : Saturday, 30 September, 2023 at 3:17 PM Count : 921
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে লইয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয় আঙ্গিনায় নোংরা পানি জমাট বেঁধে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বিদ্যালয়ের শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া খেলাধূলা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে আঙ্গিনা ও বিদ্যালয় মাঠটি। পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা মাঠে অ্যাসেম্বলি করতে পারছেন না। টিফিন চলাকালীন মাঠে খেলাধূলার কোনো সুযোগ নেই। হাটু পানি পেরিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যেতে হয় বাথরুমে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। গত ৩ জুন থেকে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সারাবছরই হাল্কা-পাতলা জলাবদ্ধতা লেগে থাকে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, ‘প্রত্যেক শ্রেণীর ছয়টি ক্লাস প্রতিদিন এক ক্লাসেই শেষ করতে হচ্ছে। প্রায় চারমাস যাবত এক রুমে সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা হচ্ছে, এতে করে পাঠদান দিতে অনেক কষ্ট ও বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। বিদ্যালয়ে মোট ১৫৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে অনেকাংশই শিক্ষার্থী কমে গেছে। অল্প সংখ্যা শিক্ষার্থী ক্লাস করতে আসে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রজিত চন্দ্র পাল ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘লইয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক। এক পাশে সাতগাঁও বাজার সড়ক ও অপর পাশে এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের রাস্তা, ফলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হলেই বিদ্যালয় আঙ্গিনাসহ বারান্দা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাগণ তাদের প্রয়োজনে চলাচলের রাস্তায় মাটি ভরাট করার কারণে আঙ্গিনার স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিপাতেই বিদ্যালয়ের আঙ্গিনাসহ বারান্দা পর্যন্ত পানি জমে থাকে। এতে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের স্বাভাবিক চলাচল, ওয়াশ বøক ব্যবহার, দ্বিতীয় ভবনে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে মাঠ ও আঙ্গিনা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ১১ই জুন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত দেওয়া হয়েছে।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জ্যোতিষ রঞ্জন দাশ ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘ওই এলাকার ড্রেনের জায়গা নিয়ে একটু সমস্যা থাকার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অত্র এলাকার ইউপি সদস্যকে বলা হয়েছে আপাতত সাময়িক ভাবে একটা ড্রেন করে দেওয়ার জন্য। আর প্রজেক্টের টাকা পাওয়ার পর স্থায়ীভাবে ড্রেন নির্মাণ করে দেওয়া হবে। আমরা এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের সাথে আলাপ করেছি। আমি ট্রেনিংয়ে রয়েছি, ফিরে ইউএনও’র সাথে বিস্তারিত আলাপ করবো।’
এবিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন ডেইলি অবজারভারকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বিষয়টা প্রধান শিক্ষক আমাদের জানিয়েছেন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়েছি। এখানে পানি জমে থাকছে, এর বড় সমস্যা হলো ওদের ড্রেনেজ সিস্টেম নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা যদি কাজ করতে চাই, তাহলে পানি না শুকানো পর্যন্ত কাজ করতে পারবো না। উপজেলা পরিষদ থেকে ইতিমধ্যে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার আমাকে যেটা জানিয়েছে, রাস্তার পাশের অংশটায় সড়কের জায়গায় ড্রেনেজ সিস্টেম করতে হবে হয়তো। সড়কের জায়গা দরকার। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে আলাপ করে ডিসি অফিসে বিষয়টি জানাতে হবে। এটা উপজেলা পর্যায়ে শেষ হবে না। ওখানকার সমস্যাটা খুব জঠিল সমস্যা। তবে আমি এই সমস্যার সমাধান দ্রুতই করবো।’
আরএ/এমবি