For English Version
রবিবার ৬ অক্টোবর ২০২৪
হোম

রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘ হচ্ছে আমের মৌসুম

Published : Friday, 8 September, 2023 at 6:00 PM Count : 184


ষড়ঋতুর এই দেশে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ তথা গ্রীষ্মকালকে বলা হয় মধুমাস। এই ঋতুর একটি ফলের নাম আম। বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের কড়া মাটির অন্যতম সেরা ফসল আম। আমের মিষ্টি ঘ্রাণ ও মধুর রসের অপেক্ষায় থাকে না এ দেশে এমন মানুষের সংখ্যা হয়তো হাতেগোনা।

বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে মাসের পুরোসময় চলে আম খাওয়া। রাজশাহী অঞ্চলের আমের স্বাদ এখন দেশের গণ্ডি পেরেয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।

আমচাষিরা জানান, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের পর আষাঢ়-শ্রাবণেও রাজশাহী অঞ্চলে আম পাওয়া যেত। তবে সেই আম তেমন সুস্বাদু নয়। অনেকটা টক-মিষ্টি স্বাদের, নাম আশ্বিনা। সুস্বাদু না হলেও যারা আম পছন্দ করেন, তাদের কাছে আশ্বিনাও প্রিয়। এরপর আমপ্রেমীরা অপেক্ষায় থাকতেন পরের বছরের বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে মাসের জন্য। তবে প্রায় দেড়দশক ধরে আমের রাজধানীখ্যাত বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের এই চিত্র প্রায় পালটে গেছে। খেতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের আমের মতো সুস্বাদু না হলেও এখনো গাছে এমনকি বাজারে রয়েছে আম্রপালি, গৌড়মতী বা বারি-১২ ও কাটিমন জাতের আম। অর্থাৎ আমের মৌসুম শেষ হয়েও যেনো শেষ হচ্ছে না।
চাষিরা আরও জানান, এখনও গাছে ও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন আমের একটি জাতের নাম গৌড়মতী বা বারি-১২। একেক এলাকার চাষিরা একেক নামে চেনেন এই আম। আশ্বিনা শেষ হওয়ার পরও গৌড়মতী ঝুলছে গাছে গাছে। গৌড়মতী ভাদ্র মাসজুড়ে পাওয়া যায়। এরপর প্রকৃতিতে নামে শীতের আমেজ। তখনো পাওয়া যায় আরেক জাতের নতুন আম, নাম ‘কাটিমন’। থাইল্যান্ডের এই আমের ফলন পাওয়া যায় বছরে তিনবার। রাজশাহী অঞ্চলে গৌড়মতির পর অক্টোবর-নভেম্বর মাসেও কাটিমন পাওয়া যায়। তবে এই জাতের আমের দাম স্বাভাবিক আমের মৌসুমের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।

কৃষিবিদরা বলছেন, কয়েক বছর আগেও ল্যাংড়া ও ফজলির পর বাজারে তেমন সুস্বাদু আম পাওয়া যেত না। এখন লেট ভ্যারাইটিজ বারি-১২ বা গৌড়মতী এবং কাটিমন ছাড়াও পাওয়া যায় বারি-৩, বারি-৪, বারি-১১ এবং ভিনদেশি ব্যানানা আম, তাইওয়ান রেড ও কিউজাই। যদিও আমের মৌসুম দীর্ঘায়িত করতে এখন পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে বড় ভূমিকায় রয়েছে গৌড়মতী এবং কাটিমন জাত। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় পুকুরপাড়ে ২ হাজার কাটিমন আমের গাছ লাগিয়েছেন রফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, বছরে তিনবার ফলন পাওয়া যাচ্ছে কাটিমন জাতের বাগান থেকে। এবার আরও মাসখানেক পর তার বাগান থেকে আম উঠবে। এগুলো ছয় থেকে সাত হাজার টাকা মণ দামে বিক্রি হবে। এরপর অক্টোবর-নভেম্বরে আবার আম কাটিমন আম বিক্রি করা যাবে। তখন ১২ থেকে হাজার ১৬ হাজার টাকা মণ দামে আম বিক্রি করা যাবে। কাটিমন জাতের আমের ফলন কম হলেও দামে পুষিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার কাটাবাড়ী ও ধামইরহাটের তালপুকুরে ৭০ বিঘা দুইটি মিশ্র ফলের বাগান আছে মোশাররফ চৌধুরীর। বাগান দুটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গৌড়মতি জাতের আম গাছ রয়েছে। তিনি জানান, গত বছর ১২ হাজার টাকা মণ দামে এই আম বিক্রি করেছি। গৌড়মতি জাতের আম ল্যাংড়ার মতোই সুস্বাদু।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে আমের মৌসুম বড় ও দীর্ঘ হচ্ছে। আমের মৌসুমকে আরো দীর্ঘায়িত করতে গবেষণা চলছে। কাটিমন জাত নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন। তাহলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসেও এই আম পাওয়া যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অতিরিক্ত পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ জানান, ফলন একটু কম হলেও লাভ বেশি হওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের আমচাষিরা এখন লেট ভ্যারাইটিজ জাতের আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে আম পাওয়া যাচ্ছে।

আরএইচ/এমবি

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,