ফ্ল্যাট উইকেটে বড় রানের ভিত্তি টপ অর্ডারকে গড়ে দিতে হয়। প্রাণহীন লাহোরের উইকেটে সেখানে বাংলাদেশ নামে মেকশিফট ওপেনার নিয়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওই মেকশিফট ওপেনার মেহেদী মিরাজই পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন। সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। তার সঙ্গে জুটি গড়া নাজমুল শান্তও সেঞ্চুরি পেয়েছেন। বাংলাদেশ পেয়েছে ৫ উইকেটে ওয়ানডেতে নিজেদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৩৪ রানের সংগ্রহ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হাসান শান্ত এবং মেহেদী হাসান মিরাজের ১৯৪ রানের অনবদ্য জুটিতে ভর করে নতুন এক রেকর্ডের সাক্ষী হলো পাকিস্তানের লাহোর গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরের নতুন রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪৮তম ওভারে রশিদ খানের বলে ছয় মেরে দলের রানকে ৩১১ তে নিয়ে যান সাকিব আল হাসান। এতেই আগের রেকর্ড ৩০৬ রান পার করে বাংলাদেশ।
আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩০০ এর বেশি করেছে মাত্র একবার। ২৩০ এর উপরে স্কোর উঠেছে মোটে ৬ বার। কিন্তু আগের সেই পরিসংখ্যান আর বাজে ব্যাটিংয়ের শঙ্কাকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
দিনের শুরুতেই চমক উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ। শামীম পাটোয়ারীর অভিষেকের ম্যাচে মেহেদী মিরাজকে পাঠানো হয় মেইক শিফট ওপেনার হিসেবে। তাতে অবশ্য ফল এসেছে। নাঈম আর মিরাজের জুটি থেকে এসেছে ৬০ রান। মুজিবের বলে নাঈম বোল্ড হলে ভাঙে তাদের জুটি।
এরপর উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। ২ বলে ০ করেই ফিরতে হয়েছে তাকে। এরপরেই আসেন নাজমুল হাসান শান্ত। শান্তর সঙ্গে মিরাজের জুটিও গড়েছে রেকর্ড। তৃতীয় উইকেটে আফগানদের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। রেকর্ড গড়া জুটির পথে মিরাজ-শান্ত দুজনেই পেয়েছেন সেঞ্চুরি।
তবে সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করা হয়নি কারোরই। মিরাজ মাঠ ছেড়েছেন চোট নিয়ে। টিভি রিপ্লেতে দেখে ধারণা করা হচ্ছে, আঙুলে ক্র্যাম্প হয়েছে। ফিজিওর সঙ্গে এরপর মাঠ ছাড়েন মিরাজ।
প্রাথমিক অবস্থায় চোট কতটা গুরুতর, বুঝা যায়নি। মিরাজ উঠে যান ১১৯ বলে ১১২ রান করে। তাতে ৭টি চারের সঙ্গে ছিল, ৩টি ছক্কার মার। আর শান্ত আউট হয়েছেন ১০৪ রানে। রানআউটের ফাঁদে পড়েছেন তিনি।
শান্ত-মিরাজের বিদায়ের পর ক্রিজে থিতু হতে পারেননি কেউই। আসা যাওয়ার মিছিলেও অবশ্য সচল ছিল রানের চাকা। সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম খেলেছেন কার্যকরি ইনিংস। সাকিবের স্কোর ৩২ আর মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ২৫ রান। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ৩৩৪ রানে।
বাংলাদেশ একাদশ: মোহাম্মদ নাঈম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, শামীম পাটোয়ারী, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম এবং হাসান মাহমুদ।
আফগানিস্তান একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শাহিদী, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাঈব, করিম জানাত, রশিদ খান, ফজলহক ফারুকি এবং মুজিব উর রহমান।