বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বৃহত্তর পরিবেশগত সাসটেইনেবিলিটির জন্য রৈখিক (লিনিয়ার) ব্যবসায়িক মডেল থেকে বৃত্তাকার (সার্কুলার) অর্থনীতিতে রূপান্তরের দিকে ক্রমবর্ধমানভাবে মনোযোগী হচ্ছে।
তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বকে কতটা পরিবর্তিত করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে পরিবেশের মূল্যে ব্যবসা আর করা যাবে না। বর্তমান সময়ে এবং আগামী বছরগুলোতে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো নিশ্চিতভাবেই এই গ্রহের ওপর প্রভাব রাখবে।”
রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘দি কেইস ফর জাস্ট ট্রানজিশনস ইন এনার্জি, এগ্রিকালচার এন্ড আরএমজি সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
প্রফেসর ইমরান রহমান, ভাইস চ্যান্সেলর, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব); জাফর সোবহান, সম্পাদক, ঢাকা ট্রিবিউন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথরিটি এর সাবেক সিইও ড. সুলতানা আফরোজও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ফারুক হাসান তার বক্তব্যে পরিবেশগত সাসটেইনেবিলিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে গ্রিন কারখানার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে এখন ইউএসজিবিসি কর্তৃক প্রত্যয়িত পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার মোট সংখ্যা ২০০, যার মধ্যে ৭৩টি কারখানাই প্লাটিনাম-রেটেড। ইউএসজিবিসি কর্তৃক প্রত্যয়িত এই গ্রিন কারখানাগুলোর প্রতিটিতেই সকল পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং কারখানাগুলো প্রচলিত কারখানার তুলনায় ৪০% কম কার্বন নির্গত করে।”
তিনি বিজিএমইএ এর টেকসই রূপকল্প ২০৩০ এর আওতায় পরিবেশ রক্ষায় বিজিএমইএ কর্তৃক গৃহীত ধারাবাহিক উদ্যোগগুলোর কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “রূপকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৩০% হ্রাসকরন, ৫০% টেকসই কাঁচামালের ব্যবহার, ৫০% ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাসকরণ, ১০০% জেডডিএইচসি রাসায়নিক ব্যবহার, ৩০% জ্বালানি ব্যবহার হ্রাস, ২০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এবং ৩০% বন উজাড় হ্রাসকরণ”।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যতের হুমকি নয়, এটা এখনই ঘটছে। এই বিষয়টি মোকাবেলার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে কার্বন নির্গমন হ্রাস করা এবং পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহন করা।”
তিনি বলেন, “ব্র্যান্ডগুলো যখন উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ করছে, তখন সাপ্লাই চেইনে কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ব্র্যান্ডগুলোরই।
এসআর