For English Version
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
হোম

ঘুরে আসুন বাগেরহাটের প্রাচীন অযোধ্যা মঠ

Published : Saturday, 12 November, 2022 at 10:38 PM Count : 352



স্থাপত্য নান্দনিকতায় বাংলাদেশের সবচাইতে সুন্দরতম মঠ অযোধ্যা। কোদলা মঠ নামেও পরিচিত এই প্রাচীন স্থাপনা। বাগেরহাট শহর থেকে আনুমানিক ১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে পুরাতন রূপসা-বাগেরহাট সড়কের যাত্রাপুর বাজার হতে প্রায় ৩ কিলোমিটার ভেতরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের অযোধ্যা গ্রামে প্রাচীন ভৈরব নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত অযোধ্যা মঠ বা কোদলা মঠ (Kodla Moth)। বিশ্ব ঐতিহ্য স্থল ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ১০ কি. মি. উত্তরে অযোধ্যা গ্রামে মঠটির অবস্থিতির কারণে এটি অযোধ্যা মঠ নামেও পরিচিত। স্থানীয়ভাবে অযোধ্যার মঠ নামেই বেশি পরিচিত। তবে কোদলা মঠ নামেও পরিচিতি আছে। কোদলা পার্শ্ববর্তী গ্রামের নাম।
বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর তাদের বিভিন্ন নির্দেশিকায় একে কোদলা মঠ নামেই লেখে। প্রায় সম্পূর্ণ মঠটিই একসময়ে পোড়ামাটির ফলকে আচ্ছাদিত ছিল। এটি একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির। অযোধ্যা মঠের নির্মাণকাল নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অযোধ্যা বা কোদলা মঠের বিশেষ আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর বাহিরের অপূর্ব কারুকাজ সমৃদ্ধ অলঙ্করণ। বর্গাকারে নির্মিত চারকোণাকৃতির ভিতের উপর নির্মিত এই মঠ। ভূমি থেকে উচ্চতা প্রায় ১৮.২৯ মিটার। ভেতরে বর্গাকার প্রতিটি দেয়ালের দৈর্ঘ্য প্রায় ২.৬১ মিটার। দেয়ালগুলো পুরুত্ব প্রায় ৩.১৭ মিটার। মঠে প্রবেশের জন্য তিনটি দরজা আছে। ধারণা করা হয় দক্ষিণের দরজাটি ছিল মূল প্রবেশপথ। বাকি দুটি প্রবেশ পথ পূর্ব ও পশ্চিম দিকে। দক্ষিণের দেয়ালে কোনো দরজা নেই। প্রবেশপথগুলোর উপরে পোড়া মাটিতে খোদাই করা লতা-পাতা, ফুল ইত্যাদি এখনো দৃশ্যমান। ভেতরের দিকে প্রায় তের ফুট পর্যন্ত লম্বা গম্বুজ উপরের দিকে উঠে গেছে।

তবে স্থাপত্যিক বৈশিষ্টানুসারে অনুমান করা হয় এটি ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে কিংবা সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে নির্মিত। বহুকাল আগে মঠের দক্ষিণ কার্নিসের নিচে প্রায় অদৃশ্যমান দুই লাইনের একটি ইটে খোদাই করা লিপি ছিল। সে লিপি অনুযায়ী সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে দেবতার অনুগ্রহ লাভের আশায় কোনো এক ব্রাহ্মণ মঠটি নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও জনশ্রুতি আছে রাজা প্রতাপাদিত্য তার গুরু অবিলম্ব সরস্বতীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই মঠ নির্মাণ করেন।

সিলেট থেকে আসা আব্দুস শুকুর ও সালাহউদ্দিন শুভ বলেন, ‘ষাটগম্বুজ, খান জাহান আলীর মাজার ঘুরে অযোধ্যার মঠ দেখতে এসেছি। কিন্তু মঠের অবস্থা দেখে খুবই হতাশ। মঠের উপরের অংশে পাখি বাসা বেঁধেছে। আবার চারিদিকেই পরগাছা জন্মেছে। আশা করি বাগেরহাটের ঐতিহ্য রক্ষার্থে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

শ্রীমঙ্গল থেকে আসা আবুজার বাবলা বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এই মঠ দেখতে আসলাম। কিন্তু এসে দেখি মঠের চারপাশে বেশ অপরিচ্ছন্ন। ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা এভাবে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকুক এটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আশা করি সামনে এসে সুন্দর-মনোরম পরিবেশ দেখতে পাব।’

বাগেরহাটের স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ জামান, হাসান মামুন ও জিনাত রায়হানা বলেন, ‘সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে বাগেরহাটের বেশিরভাগ প্রাচীন স্থাপনা পড়ে রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। এ ছাড়া যাতায়াত ব্যবস্থাও খুবই নাজুক। স্থাপনাগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি হলে বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হবে।’

কীভাবে যাবেন?
বাগেরহাট শহর থেকে অটো রিকশায় মঠে যেতে সময় লাগে কম বেশি ত্রিশ মিনিট। রিজার্ভ নিয়ে গেলে যাওয়া আসার ভাড়া ৪শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। রাজধানী থেকে বাগেরহাট যেতে পারেন সড়ক পথে। ঢাকার সায়দাবাদ ও গাবতলী বাস স্টেশন থেকে বাগেরহাটের বাস ছাড়ে। এছাড়া সড়ক কিংবা রেল পথে খুলনা এসে সেখান থেকেও সহজেই বাগেরহাট যাওয়া যায়। বাগেরহাট শহরে থাকার জন্য সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে। ৫শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকায় কক্ষ মিলবে এসব হোটেলে।

এসআর

« PreviousNext »



সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
Editor : Iqbal Sobhan Chowdhury
Published by the Editor on behalf of the Observer Ltd. from Globe Printers, 24/A, New Eskaton Road, Ramna, Dhaka.
Editorial, News and Commercial Offices : Aziz Bhaban (2nd floor), 93, Motijheel C/A, Dhaka-1000. Phone : PABX- 0241053001-08; Online: 41053014; Advertisemnet: 41053012
E-mail: info$dailyobserverbd.com, mailobserverbd$gmail.com, news$dailyobserverbd.com, advertisement$dailyobserverbd.com,