দোকানদারের শরীরে ফুটন্ত পানি ঢেলে দিলেন ইউপি সদস্য
Published : Saturday, 11 December, 2021 at 12:04 PM Count : 506
বরগুনার বেতাগীতে চা ব্যবসায়ীর শরীরে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দিয়েছেন এক ইউপি সদস্য। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার খাঁনেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মো. সিদ্দিকুর রহমান উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খাঁনেরহাট বাজারে চায়ের দোকানে বসে এলাকার কয়েকজন লোক সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সম্পর্কে সমালোচনা করেন। তারা বলেন- ইউপি সদস্য সিদ্দিক জন্ম নিবন্ধন সংশোধন বাবদ দুই থেকে তিন হাজার টাকা ঘুষ নেন। এ সময় দোকানদার রাসেল (৩৫) বলেন- এসব আলোচনা করলে দোকানের বাইরে গিয়ে করেন। তখন ইউপি সদস্যের পক্ষে দুলাল ডাক্তার নামের এক ব্যক্তি চা ব্যবসায়ী রাসেলের সঙ্গে তর্ক করেন। ইউপি সদস্য সিদ্দিককে ডেকে এনে বলেন রাসেল তোমার সম্পর্কে লোকজনের সঙ্গে ঘুষের সমালোচনা করেছে। এরপর ইউপি সদস্য চা ব্যবসায়ী রাসেলকে বাইরে ডাকেন। কিন্তু রাসেল দোকান থেকে বের হতে রাজি হয়নি।
এ নিয়ে ইউপি সদস্য সিদ্দিক ও রাসেলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য ও দুলাল ডাক্তার রাসেলের দোকানের মধ্যে ঢুকে তাকে মারধর শুরু করেন। পরে ইউপি সদস্য সিদ্দিক দোকানে থাকা চায়ের কেটলির ফুটন্ত গরম পানি রাসেলের শরীরে ঢেলে দেন। এতে তার শরীরে ফোস্কা পড়ে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন রাসেল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন বলেন, 'এতো পাশবিক নির্যাতন আমি আর দেখি নাই। কোন কারণ ছাড়াই রাসেলের শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন। এর সঠিক বিচার হওয়া দরকার না হলে মানবতা থাকে না।'
চা ব্যবসায়ী রাসেল কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, 'আজ গরিব বলে এতটা নির্যাতিত হয়েছি। বিচারটা সৃষ্টিকর্তার কাছেই দিলাম। একজন জনপ্রতিনিধির যদি এমন আচরণ হয় তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।'
ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'ও একটা বেয়াদব। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম মাত্র, শুধু হাতাহাতি হয়েছে। সম্পূর্ণ অভিযোগই মিথ্যা।'
হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, 'একজন চেয়ারম্যান হিসেবে জনগণের নিরাপত্তা দেয়া আমার দায়িত্ব। খবরটি শুনে আমি বেতাগী থানায় জানাই ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এর সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান বেতাগী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক করুণ চন্দ্র বিশ্বাস।
বেতাগী থানার ওসি মো. শাহআলম হাওলাদার বলেন, 'লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমন পাশবিক নির্যাতন করে কেউ পার পাবে না।'
-এসকে/এমএ