ব্যস্ত সময় পার করছেন কমলগঞ্জের কৃষকেরা
Published : Wednesday, 8 December, 2021 at 8:50 PM Count : 217
গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পর বুধবার সকাল থেকে রোদের দেখা পেয়ে মৌলভীবাজারের কৃষি অধ্যুষিত
কমলগঞ্জ উপজেলায় আমন উত্তোলনের ভর মৌসুমে আমন ধান উত্তোলনে এখন ব্যস্ত কৃষকরা। শেষ সময়ে মাঠে ঘাটে তারা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন কৃষকরা। তবে ধান কাটা শ্রমিকের সংকট দেখা দেয়ায় চা বাগানের বেকার শ্রমিকদের চাহিদা বেড়েছে। একই সাথে কৃষকরা আবার বোরো চাষাবাদের জন্য বোরোর বীজতলা তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে।
কৃষকরা জানান, এখন আমন উত্তোলনের শেষ সময় অতিবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে গত তিনদিন ধান কাটতে না পারলেও বুধবার সকাল থেকে ধান কাটা, মাড়াই, ধান শুকানো থেকে শুরু করে এখন ব্যস্ত সময় চলছে। তবে একই সময়ে সকল স্থানে ধান কাটা ও উত্তোলন থাকায় সবাই যার যার কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাময়িক কৃষি শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পার্শ্ববর্তী চা বাগান সমুহের বেকার শ্রমিকদের চাহিদা বেড়ে গেছে। তুলনামূলক কিছুটা কম মজুরিতে চা শ্রমিকরা ধান কাটায় নিয়োজিত রয়েছেন।
শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি দেওছড়া চা বাগানের শ্রমিক দেওরাজ রবিদাস ও অনুরোধ রবিদাস বলেন, বস্তি (গ্রাম) এলাকার লোকজন সকালেই মোটর সাইকেল ও সিএনজি-অটোরিক্সা নিয়ে আমাদের বাগানে চলে আসেন। প্রত্যেকেই ধান কাটার জন্য গাড়িতে করে শ্রমিক নিয়ে যাচ্ছেন। বিকালে আবার গাড়ি দিয়ে চা বাগানে তাদের ফেরৎ পাঠিয়ে দিচ্ছেন। ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা মজুরিতে চা বাগানের শ্রমিকরা ধান কাটছেন।
কৃষক হাবিবুর রহমান, সাদেক মিয়া ও পুষ্ম মিয়া বলেন, বর্তমানে বস্তি এলাকায় সবাই ধান কাটায় ব্যস্ত। ফলে শ্রমিকদের কিছুটা চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে কম মজুরিতে চা বাগানের শ্রমিকদের সবাই খোঁজেন। বস্তি এলাকার শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। আর চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি দিতে হয় ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে কমলগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, আসন্ন বোরো ধান চাষাবাদ করতে অনেক কৃষক বোরো ধানের বীজতলা তৈরী করছেন। আমন ধান ঘরে তুলে জমি তৈরী করে সে জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করতে হবে, তাই কৃষকরা আগেই বীজতলা তৈরী শুরু করেছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজীৎ রায় বলেন, এ বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৭০ মে:টন। প্রথম দিকে সামান্য আকারে পোকার আক্রমণসহ নানা সমস্যার পরও এ বছর আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ বাড়তি উৎপাদন হবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও জানান, এ বছর বোরো চাষাবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৪০ মে:টন। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকরা বোরোর বীজতলা তৈরী করছেন বলেও তিনি জানান। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজীৎ রায় আরও বলেন গত দুই তিন দিনের বৃষ্টিতে কৃষকরা শীতকালীন শাক সবজি বিশেষ করে আলু ক্ষেত ও সরিষার বীজ তলার ক্ষতির আশঙ্কা করলেও দ্রুত আবহাওয়ার উন্নতিতে কোন ক্ষতি হয়নি।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খান জানান, এখন আমন উত্তোলনের শেষ মৌসুম। ফলনও ভালো হয়েছে। সবাই ধান উত্তোলনে ব্যস্ত থাকায় শ্রমিকদেরও চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া আমন শেষ হওয়ার সাথে সাথেই কৃষকরা বোরোর বীজতলা ও আবাদ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।
এসএস/এসআর