চা বাগানে মাল্টা চাষ
Published : Sunday, 19 September, 2021 at 12:23 PM Count : 371
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার চা বাগানে মাল্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক চাষিরা। এক চা বাগানে দ্বিগুণ আবাদে বেড়েছে কয়েকগুণ আয়। এই আয়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বদলে গেছে চাষি ও পরিবেশের চিত্র।
চা বাগানে সমন্বিত ফল চাষ করে একদিকে যেমন ফলের পুষ্টি আরোহণ করতে পারছেন অন্যদিকে লাভবানও হচ্ছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা।
আবহাওয়া, মাটি ও পরিমিত বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার উপজেলাগুলোতে বারি-১ জাতের মাল্টার চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। চাসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে সমন্বিত ফসল হিসেবে মাল্টার বাগান করছেন চাষিরা। চা বাগানে প্রয়োগকৃত সার, কীটনাশকেই একাধিক আবাদ সহজ হওয়ায় সমতল ভূমির বিস্তীর্ণ চা বাগানগুলোতে মাল্টা চাষে মনোযোগ দিয়েছেন চাষিরা।
চাষিরা বলছেন, চা বাগানে মাল্টা চাষ করলে খরচ কম হয়। চা বাগানে যে সার কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তা দিয়েই মাল্টা উৎপাদন করা যায়। তাদের দেখে উৎসাহিত হচ্ছেন অন্য চাষিরাও।
উপজেলার রওশনপুর এলাকার ফেরদৌস কামালের ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদেকুল ইসলাম সুষম দুই একর জমিতে মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন। করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে বাবার ২ একর জমিতে ২শ বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ শুরু করে।
বাগান ঘুরে দেখা যায়, মাত্র দেড় বছরে প্রতিটি গাছেই ধরেছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা।
মাল্টা চাষি সাদেকুল ইসলাম সুষম জানান, করোনাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়া বাড়িতে এসে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা করে বাবার দুই একর জমিতে চারা রোপণ করি। মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে প্রত্যেক গাছেই প্রচুর পরিমাণে ফল ধরেছে। বিশেষ করে চা বাগানে মাল্টা চাষ করলে আলাদা খরচ করতে হয় না। চা বাগানে যেসব সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তা দিয়েই মাল্টা উৎপাদন করা যায়। বাগান থেকে ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দুই একর চা বাগান থেকে চা পাতা বিক্রি হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এবার চায়ের পাশাপাশি আরও দুই লাখ টাকার মাল্টাও বিক্রি করবেন বলে আশা তার। তার মতো অন্যান্য চাষিরাও এখন চা বাগানে মাল্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। চা বাগানে মাল্টা চাষ দেখতে প্রতিনিয়ত আসছেন পর্যটকরা। বাগান ঘুরে ঘুরে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন তারাও ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মাল্টা। ফলটি বিশ্বের উষ্ণ ও অব-উষ্ণমন্ডলীয় এলাকায় বেশি চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য এলাকার মতো এ উপজেলায় মাল্টা চাষ হচ্ছে। সমতল ভূমিতে চায়ের পাশাপাশি মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। চা বাগানে চায়ের পাশাপাশি মাল্টা চাষ কৃষকদের দ্বিগুণ আয়ের সুযোগ তৈরি করেছে। মাল্টা চাষে আগ্রহী চাষিদের সকল প্রকার সহায়তা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
-এসকে/এমএ