পরীমনি কাণ্ডে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুুরীকে রাজধানীর পন্থপথ থেকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা।এই নাট্ট্যনির্মাতাকে নিজের ‘মম’ বলে সম্বোধন করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। বিভিন্ন সময় তাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখা যায়।
পরীমনির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সবসময় পাশে ছিলেন এই নির্মাতা। বিশেষ করে গত মাসে ঢাকার সাভারে উত্তরা বোটক্লাব কাণ্ডে সর্বদা পাশে থেকে পরীমণিকে সাহস জুগিয়েছিলেন চয়নিকা।
আটকের পর চয়নিকা চৌধুরীকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তার আটকের বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা পরীমনি ও নজরুল ইসলাম রাজের মুখোমুখি করা হবে চয়নিকা চৌধুরীকে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
গত বুধবার বিকালে রাজধানীর বারিধারা বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন পরীমনি। এর পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন চয়নিকা চৌধুরী। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, পরীমনির সঙ্গে শুধুই কাজের সম্পর্ক তার। আর কোনো সম্পর্ক নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো প্রয়োজনে ডাকলে তিনি যাবেন।
গত জুন মাসে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগের ঘটনার সময় পাশে ছিলেন চয়নিকা। তাকে পরীমনি ‘মম’ (মা) বলে সম্বোধন করেন। চয়নিকাও বলেন, ‘পরীমনি ছোটবেলায় মা হারিয়েছে। ও আমাকে মম বলে ডাকে। আমিও ওকে মেয়ের মতো স্নেহ করি।’
বুধবার বিপুল পরিমাণ মদ ও ভয়ংকর মাদক এলএসডি ও আইসসহ গ্রেপ্তার হন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনি। এরপর রাতে গ্রেপ্তার হন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরীমনির বন্ধু নজরুল ইসলাম রাজ। তখন থেকে চয়নিকাকেও নজরদারিতে রাখা হয়। এছাড়া পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিমিকেও আটক করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, পরীমনি ও নজরুল ইসলাম আমাদেরকে তাদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে পরীমনির নানা অপরাধের সঙ্গে এই দুজন ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
গত জুনের শুরুতে বোট ক্লাব কাণ্ডে আলোচনায় আসেন পরীমনি। সেদিনের অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন ঢাকাই ছবির এই নায়িকা। সেদিন পুরোটা সময় তার পাশে ছিলেন নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার হারুন-অর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনির অন্যতম সহযোগী ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিসহ অন্য যারা অবৈধ কাজ ব্যবসায় জড়িত তাদের শিগগির গ্রেপ্তার করা হবে।
হারুন বলেন, পরীমনি যেসব অবৈধ কাজ ও ব্যবসা করতো, সেগুলো কাদেরকে নিয়ে করতো, কাদের সহযোগিতায় করতো, কারা তার নেপথ্যে রয়েছে, আমরা তাদের নাম পেয়েছি। তার বক্তব্য নোট করছি। যারাই তার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরই গ্রেপ্তার করা হবে।
পরীমনির বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে, জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পরীমনি একজন চিত্রনায়িকা। তিনি এর আড়ালে যে খারাপ ব্যবসাগুলো করতেন এবং এ ব্যবসাগুলোতে কারা তাকে পেট্রোনাইজ করেছেন, এ কথাগুলো তিনিও স্বীকার করেছেন। আমরাও নজরদারি করছি। ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণির সঙ্গে জিমি নামের এক তরুণ গিয়েছিলেন। তার বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আশা করি, দ্রুত সবাইকে আমরা আইনের আওতায় আনতে পারব।'
-এনএন