নতুন প্রজাতির তরমুজের বাম্পার ফলন
Published : Saturday, 3 July, 2021 at 3:00 PM Count : 117
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পঞ্চকরণ ইউনিয়নের কৃষক জাকির শেখ আধুনিক পদ্ধতিতে অসময়ে ইউনাইটেড মধুমালা (হলুদ), মেটেল সিট আরডবিউএস ০০৯ (কালো), বাংলালিংক ছাপা এসর ৭৭৭ এ তিন প্রজাতির তরমুজ উৎপাদন করে এখন গোটা জেলায় সাড়া জাগিয়েছেন।
সরেজমিনে ওই ইউনিয়নের অজোপাড়া গা দেবরাজ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মৃত. আব্দুল অহেদ শেখের ছেলে কৃষক জাকির শেখ (৪৫)। দেবরাজ ডিকে এম দাখিল মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত গার্মেন্স কর্মী হিসেবে ঢাকায় কাজ করতেন। সেখান থেকে ফিরে আসেন গ্রামের বাড়িতে। স্বপ্ন নিজের জমিতে ব্যক্তিক্রমী ফসল উৎপাদন করে কৃষি বিপ্লব ঘটানো।
চলতি বছর চার৪ বিঘা জমি নিয়ে শুরু করেন আধুনিক ফসলের চাষাবাদ। তার মধ্যে এক একর ১০ শতক জমিতে নতুন প্রজাতির তরমুজের চাষ। বাকি জমিতে বলসুন্দরি, কাশমেরিকুল বাউকুলসহ তিন প্রজাতির কুল চাষ। রয়েছে গলদা ও সাদা মাছের চাষ ও বিভিন্ন প্রজাতের সবজি। বাশে নেটের ছাউনির ওপর ঝুলছে রং বেরংয়ের নতুন তিন প্রজাতির তরমুজ। তরমুজের এ বাম্পার ফলন দেখতে প্রতিনিয়ত আসছেন জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। উৎসাহিত হচ্ছে্ন সাধারণ কৃষকরা।
সফল চাষি জাকির শেখ বলেন, ইউটিউব চ্যানেল দেখে এ তরমুজ উৎপাদনের আগ্রহ জেগেছে। বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে এ বীজ এনে স্বল্প সময়ে ৬৫/৯০ দিনের ব্যবধানে এ প্রজাতির জীবনকাল। মে মাসে রোপণ জুলাই মাসে কর্তন রোদের আর্দ্রতা পরিমাপে মাউশিং শিপট ছাড়া এ তরমুজ চাষ করা সম্ভব নয়। এবারে নতুন ফসল হলেও প্রায় চার হাজার তরমুজ হয়েছে। ব্যয় হয়েছে এক লক্ষ টাকা। ক্ষেতে প্রতিদিন পরিচর্যার জন্য দু'জন শ্রমিক কাজ করছেন। প্রথমবারেই তিন লাখ টাকার বিক্রি হবে তরমুজ। বছরে আরও দু'বার বিক্রি করতে পারব।
বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন কিসের? দেশের মাটিতে সোনার ফসল ফলিয়ে বছরে আট লাখ টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান জাকির হোসেন।
পরিবারে তার স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছেন। বড় ছেলে আরিফ শেখ পিসি কলেজে অর্নাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছোট ছেলে আরমান শেখ ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিপাংকর সমাদ্দার বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন প্রজাতির ফসল উৎপাদনে কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে সঠিক পরামর্শ অনুযায়ী এ অঞ্চলে প্রথমবারে নতুন তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে করে আগামীতে নতুন নতুন কৃষকরা চাষাবাদে ঝুঁকবে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, এক সময় লবণাক্ততার কারণে আমার ইউনিয়নে ধান চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোন ফসল হতো না। এখন ওয়াপধা বেড়িবাঁধের কারণে মিষ্টি পানিতে কৃষক নতুন নতুন ফসল ফলিয়ে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছে। সরকারি ভাবে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ, বিনা সুদে লোন এ ক্ষেত্রে চাষাবাদে কৃষকের আগ্রহ আরও বাড়বে।
উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফ বলেন, দেবরাজে নতুন প্রজাতির তরমুজের বাম্পার ফলনে লাভজনক ফসল উৎপাদন করে কৃষক জাকির শেখ এখন এ জেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ ফলন দেখে যুবসমাজ নতুন ফসল উৎপাদনে এগিয়ে আসবে। কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকদেরকে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
-এসআই/এমএ
